১৫ বছর বয়সে আমি একবার পিরিয়ড নিয়ে শবেবরাতের নামাজ পড়েছিলাম সারারাত। কারণ এই রাতে যা চাওয়া যায় তাই নাকি পাওয়া যায়, আর বছরে এটাই শেষ শবেবরাত। যদি এবছরেই মারা যাই তবে আর এইরাত আর কখনোই পাওয়া যাবে না। তাই বাসার কাউকে না বলেই নিজে নিজে চুপি চুপি আল্লার কাছে কেঁদে টেদে যা চাওয়ার চাইয়ে-ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম, আর কেউ না বুঝুক তিনি তো জানবেন কেন আমি এই মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছি।
মাঝখানে বছর দশেক কোন ধর্মীয় কাজকামের মধ্যে যাইনি, রোজা তো রাখিই-নি, কারণ ততোদিনে নাস্তিকতার বীজটা পুরো বুনে ফেলেছিলাম নিজের মধ্যে।
এখানের মুমিনদের কাছে আমার দেবী পরিচয় কিছুটা ফাঁস হওয়ায় মোটামুটি ভয়ে থাকতে হয় সবসময়। তাই এইবার ফেইক রোজা রাখতে হচ্ছে মাঝে মাঝে। খেয়ে দেয়ে নিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু কেউ জিজ্ঞাস করলে মলিন মুখে বা খাবারের দিকে লোভী দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে বলি ''হ্যাঁ রোজা রেখেছি''। এখানে রোজা ১৯ ঘণ্টার। যারা রাখতেছে তাদের মেজাজটা বিকালের পর থেকেই সপ্তমে উঠে থাকে। রোজদারের সাথে কথা বলতে হয় খুব সাবধানে, নাইলে বিপদ। রোজাদারের মন খারাপ করা যেন আল্লা নবীর মন মেজাজ খারাপ করা!
তো যা বলছিলাম, ফেইক রোজা রোজা বলতে বলতে কাল বাসার মুমিনা আমাকে জিজ্ঞাস করলো ''ডাস্টবিনে যে প্যাড দেখলাম, তোমার কি পিরিয়ড চলে?'' আমি বললাম, ''হ্যাঁ''। মুমিনা বলল, ''তাইলে রোজা রাখো কেমনে?'' আমি কইলাম, ''ও ভুইলা গেছিলাম পিরিয়ড হইলে তো রোজা রাখা যায় না'' মুমিনা টাস্কি খাইয়া কইলো, ''এইটা কি ভুইলা যাওয়ার মত জিনিস?'' আমি-''এইটা মনে রাখার মতও তেমন কিছু না। মনে রাখার মত আরও অনেক জিনিস আছে।'' মুমিনা--''আল্লা খোদা মানো না, নাস্তিক হইসো। এইগুলাই তো কইবা। মাইনসের ডরে না, আল্লার ডরে রোজা রাখো।'' আমি চুপ। মনে মনে কইলাম, ''আমি আল্লারে ডরাই না, মাইনসেরে ডরাই। নাইলে কি আর আমার মত নাস্তিক রোজা রাখার ভান করে? জান বাঁচানো ফরজ।''
No comments:
Post a Comment