Saturday, July 23, 2016

নিষিদ্ধ গাছ
গাঁজা চাষ বাংলাদেশে নিষদ্ধ। গাঁজা খাওয়ার ব্যাপারেও নিশ্চই নিষেধাজ্ঞা আছে। বাংলাদেশ পুলিশ হ্যান্ডবুক( গাজী শামসুর রহমান) প্রকাশ্যে সিগারেট খেলে ১০০ টাকা শাস্তির কথা বলা হয়েছে। গাঁজা বিষয়ে কিছু পেলাম না। প্রকাশ্যে থুথু ফেললেও ১০০ টাকা জরিমানা। রমজান মাসে মুসুল্লিদের থুথু ফেলায় কি এই আইন শিথিল হবে? গাঁজা খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সরকার মনে হয় নমনীয়।
গাঁজা গাছ সম্পর্কে কিছু তথ্য।
গাঁজার বৈজ্ঞানিক নাম Canabis sativa Linn. গোত্র হলো Urticacea.
গাঁজার স্ত্রী - পুরুষ আছে।দুটিতেই ফুল হয়।তবে পুরুষ গাছের মাদক ক্ষমতা নেই।
স্ত্রী গাছের পুস্পমুঞ্জুরী শুকিয়ে গাঁজা তৈরি করা হয়। এই গাছের কান্ড থেকে যে আঠালো রস বের হয় তা শুকালে হয় চরস।চরস নাকি দুর্গন্ধময় নুংরা কাঁথা গায়ে জড়িয়ে খেতে হয়।
স্ত্রী গাঁজা গাছের পাতা কে বলে ভাং। এই পাতা দুধে জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় ভাংগের সরবত। এই সরবত ভয়ংকর এক হেলুসিনেটিং ড্রাগ।
আমার এক বন্ধু আর্কিটেক্ট করিম ভাংগের শরবত খেয়ে কলকাতার এক হোটেলে চব্বিশ ঘন্টা অচেতন হয়ে পরে ছিল। তার কাছে মনে হচ্ছিল,তার হাত ক্রমাগত লম্বা হচ্ছে। হোটেল এর জানালা দিয়ে সেই হাত ক্রমাগত লম্বা হয়ে আকাশের দিকে চলে যাচ্ছে।
গাঁজা গাছের ফুল,ফল,পাতা এবং গা থেকে বের হওয়া নির্যাসে আছে সত্তরের বেশি ক্যানাবিনয়েডস্। এগুলোর মধ্যে ক্যানাবিনল, ক্যানাবিডিওল,ক্যানাবিডিন।নাইট্রোজেন ঘটিত যৌগ ও প্রচুর আছে।
এইসব জটিল যৌগের কারণএ মাদকতা ও দৃষ্টিবিভ্রম।
মহাদেব স্বর্গে নন্দি ভৃংগিদের নিয়ে আছেন।মহাদেবের মনে সুখ নেই,কারণ কোন নেশা করেই আনন্দ পাচ্ছেন না। তিনি পৃথিবিতে নেমে এলেন নেশার বস্তুর সান্ধানে। দেখা করলেন লোকমান হেকিমের সংগে। যদি লোকমান হেকিম কিছু করতে পারেন।ইনিই একমাত্র মানুষ যার সংগে গাছপালা কথা বলে।মহাদেব ও লোকমান হেকিম বনে জংগলে ঘুরছেন,হঠাৎ একটা গাছ কথা বলে উঠলো। আমাকে মহাদেবের হাতে দিন।মহাদেবের মনোবাসনা তৃপ্ত হবে।মহাদেব গাঁজা গাছ নিয়ে স্বর্গে গেলেন। গাঁজা গাছই একমাত্র গাছ যা পৃথিবী থেকে স্বর্গে গেল।
যে বিস্তু শিব নন্দি ভৃংগিকে নিয়ে হজম করবেন আমরা তা কিভাবে হজম করব!
কাজেই 'শত হস্তেন দূরেৎ' ( শত হস্ত দূরে)।
মানুষ কর্তৃক নিষিদ্ধ গাছের কথা জানা গেল।আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ গাছের বিষয় টা কি?
এই নিষিদ্ধ গাছের ফলের নাম 'গন্ধম'। বিবি হাওয়ার প্ররোচনায় আদম এই নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খেয়েছিলেন।
সমস্যা হল গন্ধম আরবি শব্দ না। ফারসি শব্দ।পবিত্র কোরানে কোথাও এই ফলের নাম দেয়া হয়নি। হাদিসেও নাম নেই।তাহলে আমাদের কাছে এই গন্ধম কোত্থেকে এল? বাউলেরা পর্যন্ত লিখেছেন, ' এই গন্ধমের লাগিয়া..........।'
যিশুখ্রিস্ট জন্মের চারশত বছর আগে এই নিষিদ্ধ বৃক্ষ লিখলেন ইনক।তার বই এ (The sedipigraphik book of lnok) বলা হয়েছে,এই গাছ দেখতে অবিকল তেঁতুল গাছের মত,তবে সুগন্ধযুক্ত।
গ্রিক মিথ বলেছে,নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল হল বেদানা।
রাব্বি নেসেমিয়া বলেছেন, নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল হল ডুমুর।
ধর্মগ্রন্থ তালমুদ বলেছেন,নিষিদ্ধ ফল আঙুর।
প্রচীন চিত্রকলায় আদম, ইভ,এবং সর্পের সংগে যে ফলটল দেখা যায় তার নাম আপেল।
এখন তাহলে মিমাংসা টা কি?
পাদটীকা
বিষাক্ত ফলের তালিকায় আছে আপেল!
আপেলের বিচিতে থাকে বিষ।বিষের নাম সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড। একটা বিচি খেলে তেমন কিছু হয় না। একেবারে অধিক খেলে.........।
রিডিং হিজিবিজি
হুমায়ন আহমেদ।

No comments:

Post a Comment