'একটি চোখে কাজল আর অন্য চোখ সাদা,
তুমি গভীর ঘুমে আমার শুধুই গলা সাধা!'
তুমি গভীর ঘুমে আমার শুধুই গলা সাধা!'
সঞ্জীবের এই গানটা শোনার সময় এক চোখে কাজল কেউ পরেছে ভাবলেই ভুত প্রেতের মুখ ভাসতো কল্পনায়। ইদানিং এখানে ছেলেরা এক চোখে কাজল পরছে। দেখতে মানুষের মতই লাগে। মুসলিম পুরুষেরা তো অনেক আগে থেকে দুই চোখে সুরমা দেয়। কাজল শুধু মেয়েদের সাজ এটা ভাবলে ভুল হবে। কাজল কাল চোখ ছেলে বা মেয়ে উভয়কেই দেখতে সুন্দরই লাগে।
এক পায়ে নূপুর তোমার আর অন্য পা খালি। এক পায়ে নূপুরের স্টাইলটা অনেক বছর যাবত আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এদেশীয়রা ইন্ডিয়ান স্টাইলের রূপোর নূপুরের দিকে ঝুঁকছে, আর আমরা পাতলা চেইনের মত এক ঘুঙ্গুর ওয়ালা পায়েল বেছে নিচ্ছি।
ইউরোপিয়ান ছেলেরা কান ফুঁড়ায় না বা কানে দুল পরে না এরকম খুব কম পাওয়া যায়। কানের ফোঁটায় এমন বড় বড় চ্যাপ্টা বল টাইপের রিং পরে দেখলে মনে হয় কানের লতি পুরোটাই ছিদ্র করে ফেলেছে। এবারে ছেলেদের স্টাইল হিসেবে এগিয়ে আছে নাকের নোলক, অনেক মোটা সিলভার কালারের রিং এর নোলক। শরীরের কোন না অংশে ট্যাটু ও খুবই কমন স্টাইল। কেউ কেউ ফুল পাখি লতা পাতা সাপ বিচ্ছু দিয়ে শরীরের বেশিরভাগ অংশই ঢেকে ফেলে, আবার কেই কেউ কোন ছোট সাইন বা নামের ট্যাটু করে শরীরের বিশেষ বিশেষ অংশে। সামার এলে ট্যাটুর দোকানের রমরমা ব্যবসা, উইন্টারে দোকানই বন্ধ থাকে।
চুলের স্টাইলের তো যুগান্তকারী পরিবর্তন। রিহানার মাথার একপাশে বাটি ছাট এবং আরেকপাশে লম্বা চুল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। নেইমার কাটের ছোঁয়া বাংলাদেশের নিউমার্কেটের দোকানের ছোট ছেলেদের মাঝে জনপ্রিয়তা পেলেও, এখানকার বেশিরভাগ ছেলের চুল নেইমারের মত দুই পাশ সহ পেছনে চাঁছা, শুধু মাথার উপরের অংশে লম্বা চুল। এরা গোসল না করলেও সকালে ঘুম থেকে উঠে চুলটা শ্যাম্পু করে নেয়। মেয়েদের চুলের কালারের বাপরে মা, প্রায় প্রতিমাসেই নতুন নতুন কালার করতেই হবে, এই সাদা তো এই কালা।
মেয়েদের ব্রু প্লাক, আপার লিপ বা হাত পায়ের পশম তোলার ওয়াক্সটা প্রায় সব মেয়েই করে। নাকের ভেতরের পশমও সব ছেলে মেয়ে রেগুলার উঠিয়ে পরিষ্কার করে। এগুলো না করা থাকলে তারা মানুষকে নোংরা ভাবে। আগে ইন্ডিয়ান বা বাঙ্গালি নায়কেরা বুকের পশম থাকাকে ম্যানলি ভাবতো, এখন ইউরোপের দেখাদেখি তারাও বুকের পশম তুলে ফেলে। না করলে বোধহয় অনেকটা বন মানুষের মত দেখা যায়। এখানকার ছেলেরাও বুকের পশম রাখে না, রেগুলার ওয়াক্স করে। কিছু কিছু ছেলেকে দেখলাম পায়ের লোমও ওয়াক্স করে মেয়েদের মত তুলে ফেলেছে। স্টাইল, সৌন্দর্য বা ফ্যাশন ছেলেতে মেয়েতে ভেদাভেদটা অনেক কমে এসেছে ইউরোপে। মেয়েদের শরীর তুলোমূলক সুন্দর, এবং সাজগোজে তাদেরকে সুন্দর লাগে বিধায় হয়তো ছেলেরাও মেয়েদের মত শরীরের স্টাইলের ব্যাপারে সচেতন হয়েছে। তাদেরকেও সুন্দর লাগুক। কে না চায় নিজেকে অন্যদের থেকে আরেকটু বেশি আধুনিক ও সুন্দর দেখতে?
No comments:
Post a Comment