''একমাত্র ইসলাম ধর্মই ব্যবহারিক জীবনে গণতন্ত্র, প্রগতি ও উদারতার শিক্ষা দিয়েছে।''
---ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
---ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
মাননীয় উপাচার্য প্রথমত বলেছেন, ইসলাম গণতন্ত্রের শিক্ষা দেয়। গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো ভোট সহ আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন এবং তৈরির ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সকল নাগরিকের সমান অধিকার। আপনারা সবাই জানেন সৌদি আরবে প্রথম নারী ভোট প্রদান করেছে গতবছরের(২০১৫) ১২ই ডিসেম্বর। যেখানে পুরুষ ভোটার নিবন্ধন এর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার জন এবং নারী ভোটার নিবন্ধিত হয় মাত্র এক লাখ ৩০ জন । সেই নির্বাচনে ৫৯৩৮ জন পুরুষ প্রার্থীর সাথে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল মোটে ৯৭৮ জন। হাস্যকর-ভাবে সেই সব নারী প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন পুরুষ প্রতিনিধি, নারীরা থেকেছে পর্দার আড়ালে। যেই ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা দাসী সঙ্গমকে কোরানের আয়াতের মাধ্যমে বৈধ করে, পোষা প্রাণী নিষিদ্ধ করে, অপরিচিত নারী পুরুষের দেখা সাক্ষাত নিষিদ্ধ করে, বয়স ৪৫ এর কম হলে কোন নারীর পুরুষ ছাড়া একা ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করে, এমনকি চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, ছবি আঁকা পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে। এছাড়াও সৌদি আরবে ইসলাম অনুসারে অন্য দেশের লোকদের প্রকাশ্যে ধর্ম পালন নিষিদ্ধ, ইসলামিক নিয়মে নারীদের জন্য সমস্ত খেলাধুলা নিষিদ্ধ, এমনকি ঘোড়া দৌড়-তীর নিক্ষেপ এবং স্ত্রীর সাথে খেলাধুলা ছাড়া সমস্ত প্রকারের খেলাধুলা নিষিদ্ধ, নারীর জন্য ড্রাইভিং নিষিদ্ধ, সেই ইসলামের কাছ থেকে গণতন্ত্র শিক্ষা নিতে বলেছেন আমাদের মাননীয় উপাচার্য।
আর প্রগতির কথা বলবেন? পুরো কোরান হাদিস জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন অবৈজ্ঞানিক ও হাস্যকর সব তথ্য। এর কয়েকটা উদাহরণঃ সূর্য পৃথিবীর উপর পরিভ্রমণ করে (সূরা বাকারাঃ ২৫৮), সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আরশের নীচে গিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং পুনরায় উদিত হওয়ার অনুমতি চায়(সহীহ বুখারী ইফাঃ, অধ্যায়ঃ ৪৯/ সৃষ্টির সূচনা, হাদিস নাম্বার: ২৯৭২), দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পিছনে আসে (সূরা আ’রাফঃ ৫৪), ভোরবেলা সূর্য ওঠে শয়তানের মাথায় দুই প্রান্তের মধ্য দিয়ে (সহীহ্ বুখারী, ৪:৫৪:৪৯৪)। তাছাড়া আরো রয়েছে বিভিন্ন নারী বিদ্বেষমূলক, অমানবিক, অযৌক্তিক, পরস্পর বিরোধী অজস্র আয়াত ও হাদিস। সেই ইসলাম নাকি বলে প্রগতির কথা!
আর উদারতা? পুরো কোরান জুড়ে ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের মানুষকে হেয় করে , কটাক্ষ করে, মৃত্যুর আদেশ দিয়ে, কাফের মুশরিক বলে, পাপাচারী বলে, শয়তান বলে তাদের জন্য দোজখ নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং আল্লাহতায়ালা। যেখানে ইসলামে মানুষকে মানুষ হিসেবেই মূল্যায়ন করে না, নারী নেতৃত্ব হারাম করেছেন, বহুবিবাহের নামে নারীর প্রতি অবিচারের সুযোগ করে দেয়, নারীকে পুরুষের অধীন করে ও অর্ধেক মর্যাদা দেয়, সম্পত্তিতে অর্ধেক প্রাপ্তি সহ-ধর্ষণের বিচারে লাগে চারজন পুরুষের সাক্ষী, সাক্ষী প্রমাণিত হইলেও মেয়েটিকে পাইতে হয় ব্যভিচারের শাস্তি, সাথে তো শিরশ্ছেদ এবং খুনের বদলে খুন, হাতের বদলে হাত এর মত শরিয়া আইন, সেই ইসলামের কাছ থেকে শিখতে হবে আমাদের উদারতা!
মাননীয় উপাচার্য বলেছেন, ইসলামের অপব্যবহার করে ১৯৭১ সালে দেশে নারী নির্যাতন ও গণহত্যা চালানো হয়েছিল। যুদ্ধে আহরিত সম্পদকে গণিমতের মাল হিসেবে হালাল করেছে ইসলাম, যার মধ্যে নারী অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে কোরানে অনেক আয়াত রয়েছে (সুরা আনফাল ৮:০১) (সূরা আল ফাতাহ ৪৮:২০) । নবী নিজেও গনিমতের নারী পছন্দ করতেন এবং ভোগ করেছেন।
আবু আব্দুল আজিজ বর্ণিত- যখন আল্লাহর রসুল খায়বার দখল করলেন, ——- আমরা খায়বার দখল করলাম, তাদেরকে বন্দী করলাম,লুণ্ঠিত মালামালও যোগাড় করলাম। দাহিয়া এসে বলল- হে নবী , আমাকে গনিমতের মাল হিসাবে একটা নারী দিন বন্দিনী নারীদের মধ্য হতে।নবী খুব উদার ভাবে বললেন- যাও তোমার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে নাও। সে তখন সাফিয়া বিনতে হুইকে নিল। এক লোক এসে বলল- হে নবী আপনি দাহিয়াকে সেই নারী দিয়েছেন যে নাকি খায়বারের সর্দারের স্ত্রী। নবী তখন তাকে সাফিয়াকে তার কাছে আনার জন্য হুকুম করলেন। সাফিয়াকে তার সামনে আনা হলে, তিনি দাহিয়াকে অন্য নারী নিতে বললেন ও সাফিয়াকে নিজের কাছে রেখে দিলেন। (বুখারি, বই -৮, হাদিস-৩৬৭)
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবার ধর্মশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে -প্রধানমন্ত্রী (২২ শে মার্চ, ২০১৬) সাথে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, নতুন পাঠ্যসূচিতে নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি হবে ইসলাম: শিক্ষামন্ত্রী (১৯ শে মার্চ, ২০১৬)। এর সাথে যোগ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাণী। প্রধানমন্ত্রী দেশে পাঁচশো নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৭০টি কোরআন বিতরণও করেছেন। আশা করি দেশের সব লোকের ইসলাম ধর্ম শিক্ষা নিশ্চিত হবে, ইসলাম ধর্ম প্রদত্ত নৈতিকতায় আদর্শে, গণতন্ত্রে, উদারতায় দীক্ষিত হবে। এরপর যথাযথভাবে ইসলাম শিখে হত্যা, নৈরাজ্য, হানাহানি,অশান্তি হলে বলা যাবে, এটা সঠিক ইসলামি মূল্যবোধেরই ফসল, এতে এক আনাও খাদ নেই। তখন আশা করি আমাদের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা ইসলামকে নতুন করে জানবেন শিখবেন এবং বুঝবেন। এর আগে ইসলামের বাঁশের টেস্টটা মিঠাই মনে হচ্ছে আপাতত!
No comments:
Post a Comment