আপনার ঘরের বোনটিকে, মেয়েটিকে, বউটিকে আমি রাতে একা একা বাড়ির বাইরে যেতে বা থাকতে দেন না। কারণ কিন্তু জীন, ভুত, বাঘ, ভাল্লুকে তাদেরকে আস্ত খেয়ে ফেলবে, তা নয়। কারণ আপনার ঘরের নারীরা রাতে বাইরে থাকলে অন্য ঘরের পুরুষদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হতে পারে, তাদের ইজ্জত নামক সোনার হরিণ লুট হতে পারে।
অন্য ঘরের পুরুষটিও তার ঘরের মেয়েদেরকে সযত্নে এভাবে হেফাজত করে রাখে, কারণ তার কাছে অন্য বাড়ির পুরুষটি তার ঘরের মেয়েদের জন্য নিরাপদ নয়।
এভাবে আমরা এক ঘরের পুরুষ আরেক ঘরের পুরুষকে অবিশ্বাস করে নারীর ইজ্জত নামক রসগোল্লা রক্ষা করি। আসলে কি নারী চরিত্রের লাড্ডু রক্ষা হচ্ছে ঘরে বা বাইরে? না হচ্ছে না। নারীকে যতই ঘরে পূরে রাখা হোক না কেন, পুরুষ যতদিন না নিজের চরিত্র ঠিক না করছে, ততদিন নারীরা নির্যাতিত হবে-ততদিনই নারী পথে, ঘাটে, হাটে দিনে রাতে ধর্ষিত হবে।
এখানে দেখা যাচ্ছে যে, /প্রত্যেক ঘরের পুরুষই যৌন নির্যাতক, ধর্ষক হতে পারে।/ বাক্যটি সম্ভাব্য বাক্য শোনা গেলেও বিষয়টি ঘটমান বলেই আমরা বাস্তবে প্রয়োগ করে থাকি। 'অমুক ঘরের পুরুষ ভাল হতে পারে' এমন দিব্বি স্বয়ং পুরুষেরাই দিতে পারে না। কারণ তারা নিজদের চরিত্রে স্খলনের বিষয়ে নিজেরা খুব ভাল ভাবেই জ্ঞাত। এর পরও কোন নারী যখন ধর্ষকের দিকে 'পুরুষ' বলে আঙ্গুল উঁচু করে, লক্ষ লক্ষ পুরুষ এসে আঙ্গুল নিচে নামানোর জন্য হুঙ্কার তোলে, 'সব পুরুষ নয়, হাতে গুনা কিছু সংখ্যক পুরুষ খারাপ। কিছু সংখ্যক পুরুষের জন্য আপনি সবাইকে দায়ী করতে পারেন না।'
উপরের এ-ঘর ও-ঘরের উদাহরণ থেকে বুঝা ভার কোন ঘরের পুরুষ আসলে ভাল পুরুষ। হ্যাঁ এর মধ্যে ভাল পুরুষ হয়তো থাকতে পারে, তারা বোধ হয় ঘরে থাকে না; তারা মঙ্গলে বা অন্য কোন গ্রহে খোলা জায়গায় বাতাসে বাস করে। ধর্ষক পুরুষেরাই আম জনতা, দুই একজন ভাল থাকতে পারে তারাই 'কিছু সংখ্যক পুরুষ'। তারা ব্যতিক্রম, আর ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ নয়।
(এমন ইজ্জতবিহীন, মান-সম্মানবিহীন, চরিত্রহীন লম্পট ধর্ষক পুরুষগুলা রাজ্যের যতো ইজ্জত, মান-সম্মান, চরিত্র নষ্টের বা রক্ষার দায় আবার নারীর ঘাড়েই চাপায়। নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের ভন্ডামী, ফাইজলামী, ইতরামি এবং নোংরামির কোন মা বাপ নেই।)
No comments:
Post a Comment