Tuesday, June 21, 2016

অবশেষে আত্মার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গীতার মহাত্ম নিয়ে পোষ্ট দেওয়ায় একজন শ্বেতসার উপনিষদের রেফারেন্স টেনে কমেন্ট করেছে,---
''বালাগ্রশভাগস্য শতধা কল্পিতস্য চ।
ভাগী জীবঃ স বিজ্ঞেয়ঃ স চানেন্তেয় কল্পতে।।''
----- ''আত্মার পরিমাপ, কেশাগ্রের ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ।'' এই শ্লোকের আরেক অনুবাদে দেখা যাচ্ছে , ''একটি কেশকে দশ হাজার ভাগের এক ভাগ যেরকম সূক্ষ্ম জীব হলও সেরকম সূক্ষ্ম।''(সতীশ চন্দ্র মুখোপধ্যায় সম্পাদিত)
অর্থাৎ একজায়গায় অনুবাদ করা হয়েছে আত্মা হিসেবে, আরেক জায়গায় অনুবাদ করা হয়েছে জীব হিসেবে। মূল শ্লোকে দু'জায়গাতেই জীব আছে।
কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্নঃ
১) আত্মার আকার-আয়তন তারা মাপেছিলেন কি দিয়ে?
২) আত্মা নাকি দেখা যায় না, ধরা যায়, ছোঁয়া যায় না। কিন্তু যদি আয়তন থাকে তবে মাইক্রোস্কোপিক ল্যান্সে এখনো আত্মার দেখা পাওয়া যায়নি কেন?
৩) আত্মা আর জীব কি তাহলে এক? জীবের মৃত্যু ঘটে বলে আমরা জানি, তবে কি আত্মার ও মৃত্যু ঘটে?
৪) উপরের শ্লোক অনুসারে আত্মা আর জীব যদি এক হয় তবে গীতার দ্বিতীয় অধ্যায়ে ২০ নাম্বার শ্লোক ''আত্মার জন্ম নেই, মৃত্যু নেই, ক্ষয় নাই, বৃদ্ধি নেই। শরীর নষ্ট হলেও আত্মা নষ্ট হয় না।'' মিথ্যা হয়ে যায় না কি?
দ্রঃ গীতায় আত্মার পরিমাপ নাই বললে-''উপনিষদ পড়েন, আত্মার আয়তন পেয়ে যাবেন''।
উপনিষদের আত্মার পরিমাপ দিয়ে গীতা মিথ্যা প্রমাণ করলে--''গীতাই আসল গ্রন্থ, উপনিষদের আগে বেদ গীতা পড়তে হবে।''
আসল গ্রন্থ গীতায় আত্মার পরিমাপ নাই, আত্মা একটা টোটালি গাঞ্জা তত্ত্ব ইত্যাদি কইলে ''উপনিষদ পড়েন আত্মার পরিমাপ পেয়ে যাবেন।'' এইগু
লা বাদ দিয়ে নতুন পিছিলামো হাজির করেন।
অবশেষে আত্মার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গীতার মহাত্ম নিয়ে পোষ্ট দেওয়ায় একজন শ্বেতসার উপনিষদের রেফারেন্স টেনে কমেন্ট করেছে,---
''বালাগ্রশভাগস্য শতধা কল্পিতস্য চ।
ভাগী জীবঃ স বিজ্ঞেয়ঃ স চানেন্তেয় কল্পতে।।''
----- ''আত্মার পরিমাপ, কেশাগ্রের ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ।'' এই শ্লোকের আরেক অনুবাদে দেখা যাচ্ছে , ''একটি কেশকে দশ হাজার ভাগের এক ভাগ যেরকম সূক্ষ্ম জীব হলও সেরকম সূক্ষ্ম।''(সতীশ চন্দ্র মুখোপধ্যায় সম্পাদিত)
অর্থাৎ একজায়গায় অনুবাদ করা হয়েছে আত্মা হিসেবে, আরেক জায়গায় অনুবাদ করা হয়েছে জীব হিসেবে। মূল শ্লোকে দু'জায়গাতেই জীব আছে।
কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্নঃ
১) আত্মার আকার-আয়তন তারা মাপেছিলেন কি দিয়ে?
২) আত্মা নাকি দেখা যায় না, ধরা যায়, ছোঁয়া যায় না। কিন্তু যদি আয়তন থাকে তবে মাইক্রোস্কোপিক ল্যান্সে এখনো আত্মার দেখা পাওয়া যায়নি কেন?
৩) আত্মা আর জীব কি তাহলে এক? জীবের মৃত্যু ঘটে বলে আমরা জানি, তবে কি আত্মার ও মৃত্যু ঘটে?
৪) উপরের শ্লোক অনুসারে আত্মা আর জীব যদি এক হয় তবে গীতার দ্বিতীয় অধ্যায়ে ২০ নাম্বার শ্লোক ''আত্মার জন্ম নেই, মৃত্যু নেই, ক্ষয় নাই, বৃদ্ধি নেই। শরীর নষ্ট হলেও আত্মা নষ্ট হয় না।'' মিথ্যা হয়ে যায় না কি?
দ্রঃ গীতায় আত্মার পরিমাপ নাই বললে-''উপনিষদ পড়েন, আত্মার আয়তন পেয়ে যাবেন''।
উপনিষদের আত্মার পরিমাপ দিয়ে গীতা মিথ্যা প্রমাণ করলে--''গীতাই আসল গ্রন্থ, উপনিষদের আগে বেদ গীতা পড়তে হবে।''
আসল গ্রন্থ গীতায় আত্মার পরিমাপ নাই, আত্মা একটা টোটালি গাঞ্জা তত্ত্ব ইত্যাদি কইলে ''উপনিষদ পড়েন আত্মার পরিমাপ পেয়ে যাবেন।'' এইগু
লা বাদ দিয়ে নতুন পিছিলামো হাজির করেন।
একজন নারীকে জন্মের পর থেকেই শিক্ষা দেওয়া হয় সে মানুষ হিসেবে পুরুষের থেকে নিকৃষ্ট, কম শক্তিশালী, কম অধিকার পাওয়ার জন্য সৃষ্ট। সমাজ, রাষ্ট্রের বা পরিবারের আর দশটা অধিকার যা ছেলেরা খুব সহজেই পায়, তা নারীকে পেতে দেওয়া হয় না বিভিন্ন অন্যায় নীতি প্রয়োগ করে। একজন মানুষের মানুষ হিসেবে সমস্ত অধিকার পাওয়ার বৈধতা থাকলেও নারীর ক্ষেত্রে তার প্রাপ্ত অধিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছে পুরুষের সৃষ্ট পুরুষতন্ত্র নামক অত্যাচারী তন্ত্র। নারী যেখানে জন্ম দান করে মানব জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে, পুরুষ সেখানে নারীকে মেরে, পেশী শক্তির জোরে টিকিয়ে রেখেছে 'পুরুষতন্ত্র' নামের বিশ্বব্যাপী দুর্বল ও সবলের নামে নারী ও পুরুষে (মানুষে মানুষে) বৈষম্য।
নারীর প্রজনন ক্ষমতাই নারী জাতির অগ্রগতির পথে এক প্রধান অন্তরায়। কোন নারী না চাইলেও তাকে মেনে নিতে হচ্ছে প্রজনন দাসত্ব। নারীর গর্ভধারণ তার গুণ নয়, এটা প্রকৃতিগত ভাবে তার শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। গর্ভধারণ নারীর কাজের সামর্থ্যকে কমিয়ে দেয়। কাজের সামর্থ্য কমার দরুণ খাদ্য, নিরাপত্তা ও শারীরিক অক্ষমতার জন্য তাকে হতে হয় পুরুষের উপর নির্ভরশীল। যে নারী যত বেশি গর্ভধারণ করে, তার শারীরিক শক্তি ততো বেশি কমে যায়, এর পাশাপাশি বেড়ে যায় সন্তান লালন পালনে সময় দানের ব্যস্ততা।
যেহেতু শারীরিক শক্তি মানসিক শক্তির ধারক, তাই এই শারীরিক দুর্বলতা স্বভাবতই একটা মানুষকে মানসিক ভাবে অসহায় করে তোলে। এসব ক্ষেত্রে নারী তার জীবনসঙ্গীর সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বেশি করে চায়। যুগের পর যুগ নারীর এই সহায়তাকে নারীর সকল ক্ষেত্রের দুর্বলতা ভেবে পুরুষ তাকে পর করেছে। তার উপর চালিয়েছে আধিপত্যের খড়গ। যেখানে সম্পর্ক হওয়ার কথা ছিল বন্ধুত্বসুলভ। তা না হয়ে সম্পর্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসক ও শোষিতের।
আদিম যাযাবর শ্রেণীতে নারীর সন্তান ধারণকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হতো না। এমনকি নারী নিজেও সন্তান ধারণ ও স্তন্যদানকে পবিত্র জ্ঞান করে নিজের কর্তব্য মনে করতো না। সন্তান ধারণ তাদের কাছে ছিল সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়, প্রতিকূল ও প্রকৃতির বিঘ্নিত দুর্ঘটনা। সেই শ্রেণীর কাছে শিশু হত্যা ছিল অতি সাধারণ ঘটনা। যারা বেঁচে যেতো তারা বাঁচতো খুব অযত্ন আর অবহেলায়। কারণ তখন তাদের কাছে সম্পত্তির কোন মূল্য ছিল না, ছিল না উত্তরপুরুষের জন্য সম্পত্তি রক্ষার চিন্তা।
প্রাক কৃষি যুগে সকল ক্ষেত্রে কাজ ও শক্তির প্রয়োগে নারী ছিল পুরুষের চেয়ে এগিয়ে। বোঝা বহন ও শিকারে নারী ও পুরুষের ছিল সমান অংশগ্রহণ, কোথাও কোথাও নারীর অংশগ্রহণের মাত্রা ছিল পুরুষের চেয়ে বেশি। ধীরে ধীরে বন্য পশু ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য, গোষ্ঠীর লোক বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার দরুণ বেশি বেশি সন্তান উৎপাদন জরুরী হয়ে উঠে।
নারী প্রকৃতিগত ভাবেই সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে। সন্তান উৎপাদনে নারীর সহযোগিতার অংশকে দুর্বলতা ধরে পুরুষ গড়ে তুলেছে তাদের রাজ্যের ইতিহাস, এ ইতিহাসে পুরুষ তৈরি করেছিল নিজেদের সুবিধেমত নিজেদের জন্য আলাদা এক রাজ্য। তারা তাদের সুবিধের রাজ্যে তৈরি করে রেখেছে যেখানে পুরুষ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন ও মুক্ত, তৈরি করেছে নারীর জন্য বৈষম্য মূলক ধর্মীয় অনুশাসন, টিকিয়ে রেখেছে বহুবিবাহ, পতিতা-প্রথার নামে বহুগামিতা, উত্তরাধিকারের নামে নিজেদের অস্তিত্বের মূল্য বাড়িয়েছে টাকার অংকে। অন্যদিকে নারীর জন্য তৈরি করেছে আলাদা আরেক রাজ্য সেখানে সে পরাধীন, সীমাবদ্ধ, বন্দী, শোষিত, নিগৃহীত, নির্যাতিত, অবমূল্যায়িত।
শারীরিক শক্তি শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নয় তা তো আমরা এখন জেনে গেছি (যদিও মানি না)। দাস প্রথায় বাঘের মত শক্তিধর নিগ্রোরা দাসত্ব করেছে শ্বেতাঙ্গদের। বর্ণপ্রথা এখনো আমাদের শিরায় শিরায় বহমান। আমরা এখনো ফর্সা ও কালো দিয়ে মানুষের মর্যাদা বিবেচনা করি, শারীরিক শক্তির বিবেচনা এক্ষেত্রে নগণ্য। প্রযুক্তির অগ্রগতিতে গাড়িতে হুইল ঘুরিয়ে আমরা এখন ঘণ্টায় একশো কিলোমিটার বেগে গাড়ি দৌড়াই। এখানে নারী পুরুষের শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব বিচার্য নয়। পৃথিবীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে স্পেসশিপে চড়ে নারী পুরুষ উভয়ে একই সাথে মঙ্গলগ্রহে পাড়ি জমায়। এখানেও শারীরিক শক্তি মুখ্য নয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কাছে পেশীশক্তি তুচ্ছ, তা পারমাণবিক শক্তির দাপটে প্রকাশ্য। চাইলে পারমাণবিক বোমের সুইচ নারী অথবা পুরুষ যে কেউ চাপতে পারে।
সবচেয়ে বড় সত্য হল নারী কখনো পুরুষের বিপরীতে তার মূল্যবোধ তৈরি করেনি, যেটা পুরুষ করেছে শুরু থেকেই। আজও একইভাবে গড়ে উঠছে নারী আর পুরুষের বৈষম্য ভিত্তিক নিয়মকানুন।  ইতিহাস বদলে যায়, ইতিহাস বদলাবেও। ভবিষ্যৎ মানব প্রজাতির কাছে ইতিহাসের পাতায় এই 'পুরুষতন্ত্র' নামক শব্দটি হবে সবচেয়ে নিকৃষ্ট, ঘৃণ্য ও কালো একটি শব্দ এবং নিঃসন্দেহে এই বিশাল কালক্ষেপণের অধ্যায়টি হবে সবচেয়ে বড় কালো একটি অধ্যায়।
http://bangla.jagoroniya.com/opinion/741/%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F-%E0%A6%98%E0%A7%83%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%93-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8B-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%B6%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6
তোমার আহ্বান---
উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের চেয়েও বেগবান।
উতাল হাওয়ার মত ছুটে এসে--
মুহুর্তে আমাকে তছনছ করে
নিমিষেই সুদূরে ফুরিয়ে গেলো।
তোমাকে দেখার পর আমার আর প্রকৃতি ভাল লাগে না।
তোমাকে ছোঁয়ার পর আমার আর আমাকেই ভাল লাগে না।
তোমার সুবাস নেওয়ার পর আমার আর ফুলের সুঘ্রাণ ভাল লাগে না।
তোমার হাত ধরার পর আমার আর কী-প্যাড ভাল লাগে না।
তোমার চুম্বন পাওয়ার পর আমার আর কিছু খেতে ভাল লাগে না।
তোমার বুকে যাওয়ার পর আমার আর কোথাও যেতেই ভাল লাগে না।
তোমার চোখে চোখ রাখার পর আমার আর কোন মৃত্যুই ভাল লাগে না।
শিক্ষকদের কোপানোর কারণ কি?
---কারণ এই শিক্ষকেরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর সব শিক্ষা দিলেও কোপানোর শিক্ষাটা দেয় না।
ঘুমানোর সময় তোমাকে মনে না পরলেও
ঘুম থেকে উঠে ঠিকই তোমাকে খুঁজি।
আমাকে যে তোমার কোন বেলাতেই মনে পরে না
সেকথা আমি বেশ বুঝি।
সুসময়ে নয়,
অন্তত খুব দুঃসময়েও জিজ্ঞাস করতে পারতে
আমি কেমন আছি?
আমার ভাল থাকা না থাকাতে
তোমার কিছুই যায় আসে না;
তাই কি তুমি এমন নির্লিপ্ত?
তোমার ভাল থাকাতে আমার যায় আসে বলেই-
মাঝে মাঝে জিজ্ঞাস করি,
''তুমি আজ কেমন আছ?''
মজা কি জানো?
সেই শব্দ তোমার কান অব্ধি পৌঁছানোর মত
কোন ক্ষমতা বা ফ্রিকোয়েন্সিই আমার নাই।
তবুও আমি বোকার মত এই ভেবে সুখ পাই,
আমার আর কেউ না থাকুক-আর কিচ্ছু না থাকুক,
আমার তো একটা 'একলা তুমি' আছ।
হিন্দু মা মেয়ে বা মুসলিম মা মেয়েকে একসাথে একাত্তরে ধর্ষণ করতো পাকিরা। এখনো করছে বাঙ্গালিরা। এই দুজাতের জাতটা ভিন্ন হলেও এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল তারা উভয়েই পুরুষ এবং উভয়েই মুসলিম। আগেও বলেছি ধর্ষক হওয়ার জন্য কোন জাত ধর্ম লাগে না, পুরুষ হলেই চলে।
মা মেয়েকে একসাথে ধর্ষণের খবরকে পত্রিকাগুলো প্রমোদতরী ভাসিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ বলে হাইলাইটেড করেছে। হিন্দু নারী হল গণিমতের মাল, এখানে প্রমোদ তরী বলাটা বেশ মানিয়েছে। ট্রলারে তোলে নিয়ে ধর্ষণ একটা কমন ঘটনা,কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগই প্রকাশিত হয় না। বাস ওয়ালারা বাসে, ট্রেনের যাত্রীরা ট্রেনে, ঠেলা ওয়ালা ঠেলাগাড়িতে, ক্ষেতওয়ালারা ক্ষেতে, মোট কথা যে যেই বাহনে থাকুক না কেন, ধর্ষণ কেউ যান বাহন বা মাঠ ক্ষেত বুঝে করে না, ধর্ষণ করে নারী বুঝে।
এখানে মা আর মেয়েকে একসাথে, এখানে ধর্ষণ না হয়ে গণধর্ষণ, এখানে একবার না করে পালাক্রমে, এখানে খলনায়কেরা না করে লীগার নায়ক, এখানে বাস ট্রেনে না ট্রলারে, সিনেমেটা বেশ জমেছে। সিনেমা দেখে যান লীগারবাল, দলারবাল, বামবাল, ডানবাল--আপনার নিজের ঘরের মা বোন একত্রে ধর্ষিত হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। আসলে আপনারা সবাই দিন শেষে এক একজন ধর্ষকবাল। তা না হলে এগুলো দেখে শুনে বুঝে বন্ধ করার কোন রকম উদ্যোগ না নিয়ে পরবর্তী ধর্ষণের জন্য ওয়েট করেন, যেটা হবে আরও থ্রিলার ও এডভেঞ্চারে পরিপূর্ণ।
ভাউয়েরা আপনারা ঠিক থাকলে আপনার মা বোনকে কোন হাওয়ার পোলারা ধর্ষণ করতে সাহস পায়?
১) পাকিস্তানের এক নারী মানবাধিকার কর্মীকে প্রকাশ্যে টিভির অনুষ্ঠানে তার এবং তার মায়ের সালোয়ার খুলে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন জামায়াতে উলেমা-ই ইসলাম ফজল এর প্রতিনিধি হাফিজ হামদুল্লাহ। 'তোরে এবং তোর মারে ছুদি' এটা পুরুষদের মুখের কমন বুলি, হোক আস্তিক অথবা হোক নাস্তিক। মা ছুদার ক্ষেত্রে সব ধর্ম এবং সব বর্ণের পুরুষই সমানভাবে একটিভ। এখন ঘটনাটা ওপেন লাইভ অনুষ্ঠানে হয়েছে বলে খবরটাকে সবাই নিন্দার চোখে দেখছেন। আমার পোষ্টের কমেন্ট বক্সে ডেইলি শ'খানেক এমন নতুন ধর্ষক দেখা যায়। এতে অবাক হওয়ার মত কিছু দেখি না বা এতে কারো কোন সমস্যা হয় বলে মনে হয় না; বরং সবাই এই ধর্ষণে আনন্দিত হয়। পুরুষ জন্মই নিয়েছে তার সহ অন্যের মাকে রেগুলার ছুদার জন্য। পুরুষ হইল কুত্তা বিলায়ের মত একটা মা ছুদা জাত।
২) সমকামীদের নাইটক্লাবে আফগান বংশোদ্ভূত ওমর মাতিন নামক ব্যক্তির বন্দুকের গুলিতে সেঞ্চুরী অভার করেছেন। তার গুলিতে নিহত হয়েছেন ৫০ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৩ জন সমকামী ব্যাক্তি। আপনি বিষমকামী বলে সমকামীদের একটা বাল ছিঁড়া না গেলেও, আমি সমকামী বলে আপনি এবং আপনার ভগবানেশ্বরাল্লা এমন হমোফোবিক কেন?
৩) নিষিদ্ধ মাস না শেষ হলেও নিষিদ্ধ কামকাজ কি বন্ধ আছে? ধার্মিক ভাইয়েরা আপনেরাই আপনাদের আল্লা খোদার নির্দেশই মানেন না, আবার নাস্তিকদেরকে বেহেস্তে পাঠানোর জন্য সারাদিন তাদের পোস্টে চিল্লাফাল্লা করেন। আগে নিজেদের বেহেস্ত কনফার্ম করেন পরে অন্যদের টানাটানি কইরেন।
৪) নাও ইটস টাইম টু ব্যান ফাকিং পিসফুল ইসলাম।
প্রচণ্ড শীতে জমে যাওয়া স্থবির ঠোঁটে
তোমার একটা চুমু ধার চেয়েছিলাম।
এরপর বসন্ত গিয়ে গ্রীষ্মের খরা এসে গেলো
কোন এক শুভক্ষণে তুমি দিবে বলে
আমি এখনো সেখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে।
একবার তুমি চুমু দিলেয় বুঝতে
কেমন করে আমি অ আ এ ঐ সহ
সমস্ত স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ ও শব্দে শব্দে
ভরে দিতাম তোমার তৃষ্ণার্ত ঔষ্ঠদ্বয়
মুহূর্তে তুমি শিখে যেতে
আজন্ম না শেখা যত বাক্যমালা।
একবার চুমু ধার দিলেই জানতে
আমি কেমন ঋণ শোধ করতে পারি!
একবার চুমু দিলেই দেখতে
আমি কেমন করে ভাঙতে ভাঙতে গড়তে পারি।
মেয়রা মায়ের জাত ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মাতৃত্বের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মেয়েরা কিশোরী বয়স থেকে পিরিয়ড নামক অস্বাভাবিক ও অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েদের শরীরে জোর কম ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েরা লজ্জাবতী ----তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েরা শরীরে অতিরিক্ত কাপড় পরে ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়রা সন্তান ধারণ করার ফলে দুর্বল হয়ে যায়---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েরা ধৈর্যশীল সহ্যশীল ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েরা হাসি মুখে জুতার বারি খাইতে পারে ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েরা অভাবে পড়লে পতিতা হয়ে যায় ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েদের শরীর ভর্তি চর্বিওয়ালা মাংস ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েদের মাথায় লম্বা চুল থাকে ---তাদেরকে সম্মান করুন।
মেয়েদের শরীর ভর্তি বাল থাকে ---তাদেরকে সম্মান করুন।
‪#‎রোজা_রঙ্গ‬:
পিরিয়ড চলা অবস্থায় নারী নাপাক। তাই তাদের রোজা কবুল হয় না। এই নাপাক নারীকুলের দ্বারা বানানো ইফতারি/সেহেরি খাওয়া কি পাক হবে?
তোমাকে ভালবেসে জেনেছি,
তোমাকে পাওয়ার চেয়ে ঢের বড়
তোমাকে হারানোর ভয়।
অনন্ত জীবনের নিশ্চয়তা পেলেও,
ক্ষণেক্ষণে ভীষণ অনিশ্চয়তায়
নিজেকে তুচ্ছ মনে হয়।
নারীবাদ
নারীকে মানুষ হিসেবে সকল ক্ষেত্রে তার ন্যায্য অধিকারের দাবি নিয়ে কথা বলাই হল নারীবাদ। এর জন্য যারা কথা বলেন তারাই নারীবাদী।
নারীবাদীরা পুরুষ ছাড়া দু'কদম চলতে পারে না
যারা বলেন নারীবাদীরা পুরুষ ছাড়া দু'কদম চলতে পারে না, তারা আসলে নারীবাদ বলতে পুরুষ-তন্ত্রের ঠিক উল্টো পিঠ বুঝেন। তারা ভাবেন নারীবাদীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করলে নারীরাও হবে পুরুষের মত শাসন ও শোষণকারী অত্যাচারী জাতি। তারা ভাবেন নারীবাদ মানেই সকল ক্ষেত্রেই পুরুষের স্বৈরাচারী ক্ষমতার মত নারীর ক্ষমতায়ন। সেই ভয়ে নারীবাদীদের মুখ বন্ধের জন্য তারা এরকম বুলি আওড়ান। এরাই আসলে আসল নারী-বিদ্বেষী এবং পুরুষ-তন্ত্রের ধারক বাহক। নারীবাদীরা কখনোই পুরুষকে ফেলে দিয়ে তাদের একার সমাজ তৈরি করার কল্পনা করেন না। তারা চায় পুরুষতন্ত্রের প্রয়োগকৃত নারী বিরোধী নিয়ম গুলো বন্ধ হোক, নারী পুরুষের পারস্পরিক সমান অধিকার প্রাপ্ত হয়ে পাশাপাশি সহবস্থান করুক।
নারীবাদীরা নিজেদের সবকিছুতেই পুরুষের সাথে তুলনা করে
সমাজের মানুষ প্রধানত দুই প্রজাতির (সঙ্গত কারণেই আমি তৃতীয় লিঙ্গের কথা এখানে টানছি না), নারী ও পুরুষ। পুরুষ তো কখনো নিজের কোন অধিকারের ব্যাপারে নারীর সাথে নিজেকে তুলনা করে না। কেন? কারণ তারা সব ধরনের অধিকারের সুযোগ সুবিধে এমনিতেই ভোগ করে। নারী পরিপূর্ণ মানুষ হয়েও সেগুলো থেকে বঞ্চিত হয়। এক্ষেত্রে তুলনটা কার সাথে হবে? নারীর সাথে পুরুষের? নাকি কুকুর বেড়াল গরু ছাগলের?
নারীবাদ ভাল, কিন্তু পুরুষকে শত্রু ভাবলে বিবাদ অনিবার্য
নারীকে শত্রু বিবেচনায় রেখেই তো পুরুষ-তন্ত্র তাদের সুবিধে মত শত কোটি নিয়ম বানিয়ে রেখেছে। তবে কেন কোন কোন নারী 'পুরুষ' নামক অবিবেচক অত্যাচারী মানুষকে শত্রু ভাবার অধিকার রাখে না?  নারীবাদী হতে হলে অত্যাচারী আর নিপীড়ক কে মুখে মধু এবং গায়ে ফুল চন্দন মাখিয়ে দিলেই কি তা হবে তা সহি নারীবাদ? হাজার হাজার বছরের অন্যায়-অবিচারের সাথে প্রতিদিনের ধর্ষণ, এসিড ছোঁড়া, হত্যা, যৌতুকের জন্য অত্যাচার, প্রতারণা, বহুবিবাহ, বহুগামিতা, নারীকে নিজের বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়ি যেতে বাধ্য করা, নারী পাচার, পতিতালয়ে বিক্রি, সম্পত্তি হরণ, তাদের জন্য বানানো অন্যায় আইন, এগুলো ভেবে কেউ যদি পুরুষকে ঘৃণা করে শত্রু ভেবে বসে কি খুব বেশি ভুল হয়ে যাবে? আমি বলি কি- যারা এই বিষয় গুলো বুঝতে পেরেও 'নারীবাদ মানে পুরুষ বিদ্বেষ নয়' বলেন তারা একটু হলেও মনে মনে লজ্জিত হওন। 
নারীবাদ টিকে আছে পুরুষ-তন্ত্র পুঁজি করে
নারীকে যখন পুরুষ নামক প্রজাতিটির মানুষেরা নির্যাতনের মাধ্যমে অধিকার হরণ করবে, তখন প্রতিবাদটা পুরুষ এবং তাদের দ্বারা তৈরিকৃত তন্ত্র 'পুরুষ-তন্ত্রের' বিপক্ষেই হবে। কোন হাতি ঘোড়া ডাইনোসর তন্ত্রের বিপক্ষে হবে না। পুরুষ-তন্ত্রই টিকেই আছে নারী নিপীড়নকে পুঁজি করে। এক্ষেত্রে তারা এই অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়নটা না করলে নারীবাদ এর প্রসঙ্গ আসার প্রশ্নই আসে না।
http://bangla.jagoroniya.com/opinion/483/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B7
“দিতে পার একশ' ফানুস এনে আজন্ম সলজ্জ সাধ, একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।” হুমায়ুন আহমেদ এই কবিতাটা যখন লিখেছিলেন তখনো তিনি ফানুস স্বচক্ষে দেখেননি।
আমার মনে আছে ক্লাস ফোরে থাকতে প্রথম আমি কবিতা লিখেছিলাম নদী নিয়ে। তখনো স্বচক্ষে নদী দেখিনি। এরপর স্কুলে পড়ার সময় প্রায়ই রবীন্দ্র সঙ্গীত লিখতাম। তখনো জানতাম রবীন্দ্র সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ ছাড়া অন্য কেউ লিখতে পারে না। এর বহুকাল পর বন্ধুরা মিলে যখন একদিন সবার কিছু না কিছু লেখালেখি বাধ্যতামূলক ফর্দ ধরিয়ে দেওয়া হলও, সে রাতে অনেক কষ্ট করে একটা কবিতা লিখেছিলাম বর্ষাকাল নাকি বসন্তকাল নিয়ে! কিছু তো হয়ই-নি উল্টো আরও নিজের লেখার অপরিপক্বতা নিয়ে নিজেকেই লজ্জিত হতে হয়েছিল। সে কবিতা এখনো আছে আমার কাছে। পড়লে নিজেই অবাক হই। আমার বর্তমানের সব কবিতা মূলত গদ্যছন্দে, খুব কম সংখ্যকই ছন্দ মেনে লেখা। মাত্রা, ছন্দ মেপে আমি কবিতা লিখতে আমি পারি না। পারলেও পুরোভাব উঠে আসে না। আর আমার কবিতাগুলো কবিতার কাতারেও পরে না। কবিরা এগুলোকে কবিতা বলবেন না।
কোন বিষয়ে লিখতে গেলে সে বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখা জরুরী। যদি গদ্য হয় তবে তো আরও জরুরী। পদ্যে মূলত ভাবটা জরুরী। লালন শিক্ষিত ছিলেন না কিন্তু তার কবিতার ভাব আমাদেরকে পরিপাটি শিক্ষিত করে। পদ্য লেখা যথেষ্ট কঠিন কাজ। কারণ পদ্যে চাইলে পুরো একটা জাতির ইতিহাসকে অল্প কথায় ফুটিয়ে তোলা যায়। ভাষার প্রাঞ্জলতা এবং পাঠকের গ্রহণযোগ্যতা বজায় রেখে অনেক বড় কোন বিষয়কে ছোট পরিসরে নিয়ে আসতে হয়। একটা বিতর্কিত ছোট্ট কবিতা কোন জাতিতে যুদ্ধ বাঁধিয়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট। একটা কবিতা কোন জাতিতে প্রেরণা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সহায়কও হতে পারে।
জীবনানন্দ দাশকে তার প্রকাশিত ক্যাম্পে কবিতার জন্য অশ্লীলতার দায়ে চাকরীচ্যুত হতে হয়েছিল। 'কালো সূর্যের কালো জ্যোৎসায় কালো বন্যায়' এই নামে একটি কবিতা লেখার জন্য 'জন্মই আমার আজন্ম পাপ' কবিতা খ্যাত কবি দাওদ হায়দারকে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ বিমানের একটা রেগুলার ফ্লাইটে করে তাকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই ফ্লাইটে তিনি ছাড়া আর কোনও যাত্রী ছিল না। তাঁর কাছে সে সময় ছিল মাত্র ৬০ পয়সা এবং কাঁধে ঝোলানো একটা ছোট ব্যাগ। এখনো ফিরে পাননি তার নাগরিক অধিকার। এরকম আরও অনেক উদারহন আছে। তসলিমা নাসরিন মৌলবাদীদের রোষানলে পরে দুই মাস হাইডিঙ্গে থাকার পর দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। আজও তিনি ফিরে আসতে পারেননি তাঁর মাতৃভূমিতে। 'মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি'... ১৯৭১ সালে এমন অনেক কবিতা মুক্তিযুদ্ধের গান হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়েছে, যা যোদ্ধাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার শক্তি, সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছে। কবিরা পারেন কোন দেশের অভিধানে নতুন নতুন শব্দ যোগ করতে। কলকাতার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেসময় রবীন্দ্রনাথের লেখা নিয়ে ছাত্রদের কে ভুল বানান শুদ্ধি করণের পাঠ দেওয়া হতো। রবীন্দ্রনাথ বিখ্যাত হওয়ার পর সে দায় ঘুচেছে।
কোন কবি বা লেখক জীবদ্দশায় বিখ্যাত হয়ে গেলে তিনি মারা গেলে তার সম্মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেলেন, তিনি জীবিত থাকতেই সেই সম্মান পেয়ে গেছেন। জীবনানন্দ দাশ পাননি। জীবনানন্দ দাশ মরে যাবার পর বিখ্যাত হয়েছেন। বিংশ শতাব্দীর আধুনিক কবি বা শুদ্ধতম কবির সম্মান তিনি পেয়েছেন, তবে তিনি মারা যাওয়ার পর। বাঙালি মুসলমান জীবিত প্রতিভাকে লাশে পরিণত করে, আর মৃত প্রতিভার কবরে আগরবাতি জ্বালে-কথাটা মিথ্যা নয়।
ব্রিটিশ পিরিয়ডে ইংরেজ সরকারের কাছে তাদের সৈন্যরা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উনিশ শতকে ব্রিটিশ সৈন্যরা বেশ্যাদের সাথে খুব বেশি সংস্পর্শ স্থাপন করায় তাদের মাঝে যৌন রোগের প্রকোপ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। এই নিয়ে ইংরেজ সরকার বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। ইংরেজ সৈন্যদের মধ্যে যৌনরোগের হার ১৮২৭ এবং ১৮২৯ সালে যথাক্রমে ২৮% এবং ৩১% ছিল, যা কিনা ১৮৬০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৭০% এ। তখনকার এক হিসেবে পুরো কলকাতা জুড়ে বেশ্যার সংখ্যা ছিল ৩০,০০০।
উনিশ শতকে লেখালেখি সভাসমিতিতে অংশগ্রহণের পাশাপাশি, সতীদাহ প্রথা রোধ, বিধবা বিবাহের প্রবর্তন, ইত্যাদির মাধ্যমে মেয়েদের সামজিক অবস্থার পরিবর্তন হলেও ভদ্র ঘরের মেয়েরা বাড়ির বাইরে গিয়ে আয় করছে এরকম দৃশ্য বেশ্যাবৃত্তি ছাড়া খুব একটা দেখা যায়নি। প্রতিটি বেশ্যার বেশ্যা হওয়ার পেছনে ইতিহাস থাকে। 'এলোকেশী বেশ্যা' বইয়ে তেমনি ফুটে উঠেছে এলোকেশী কিভাবে বেশ্যাবৃত্তিতে নামে।
ইংরেজ সৈন্যদের মাঝে এসকল যৌনরোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য সরকার বেশ্যাদের উপর এক আইন প্রণয়ন করেছিলেন; যার নাম, 'চৌদ্দ আইন'। চৌদ্দ আইনের মানে হলো প্রতিটি বেশ্যাকে প্রতি চৌদ্দ দিবস অন্তর অন্তর থানায় গিয়ে এক ধরনের শারীরিক পরীক্ষা করাতে হত। সেই শারীরিক পরীক্ষায় কোন রোগ ধরা পরলে তাকে পাঠানো হতো 'লক হসপিটাল' এ, সেখানে বন্দি রেখে তাদেরকে চিকিৎসা করানো হতো। লক হসপিটালের ধারণা এসেছিল ইংল্যান্ডে ১৭৬৪ সালে তৈরি করা নেকড়েদের আটক করার জন্য 'লক হসপিটাল’ থেকে। এই আইন অনুযায়ী বেশ্যাদেরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। এক ভাগ ইংরেজ সৈন্যদের সাথে মিশতে পারতো; তাদের জন্য ছিলো আলাদা থাকার ব্যবস্থা, অন্যভাগ মিশতে পারতো না। যেহেতু সৈন্যরা মিলিটারী তদারকির অধীনে থাকা বেশ্যা রেখেও বাইরের বেশ্যাদের সাথে অবাধে মেলামেশা করতো, তাই ইংরেজ সরকারের এই আইন সৈন্যদের মাঝে যৌন রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে তো পারেনি উল্টো যখন এই আইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল-তখন সৈন্যদের মধ্যে প্রায় ৫০% যৌন রোগে আক্রান্ত ছিল।
তখনকার দিনে রচিত বিভিন্ন সংগীত কাওয়ালী কবিতায়, নাটকে, প্রহসনে এবং সেই সময়ে প্রকাশিত বটতলার বইগুলোতে বিভিন্নভাবে বেশ্যাদের ভোগান্তির কথা উঠে এসেছে। সেই সাথে অনেক গল্প, কবিতা, গান, বই রচিত হয়েছে বেশ্যাদেরকে ঘাতকিনী হিসেবে উল্লেখ করে। চৌদ্দ আইনে বেশ্যাদের ভোগান্তির কোন অন্ত ছিল না। আইন অনুযায়ী প্রতিটি বেশ্যাকে সরকারী ভাবে রেজিস্ট্রারভুক্ত হতে হতো, কয়েক দফা সরকারী কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে। প্রত্যেকটা বেশ্যার থাকতো আলাদা আলাদা রেজিস্ট্রি নাম্বার। অন্যদিকে খদ্দেররা ছিলো সমাজের বিভিন্ন মান্য গণ্য ধনবান পুরুষ, যাদের জন্য এরকম কোন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়নি। এমন কি যেসব বাড়িতে বেশ্যাবৃত্তি চলতো তাদের মালিকদেরও সমস্ত তথ্য সরকারী নথিভুক্ত করতে হতো। সরকারী ভাবে হুকুম ছিল, প্রতি চৌদ্দ দিন অন্তর অন্তর কোন বেশ্যা ডাক্তারী পরীক্ষা করাতে না গেলে বা যেতে অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে জারি হতো সোজা গ্রেফতারী পরোয়ানা। দিনে রাতে যেকোন সময় উক্ত নারীকে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যেতো, এছাড়াও ছিলো বিভিন্ন নিয়মে বিভিন্ন মেয়াদী শাস্তি ও অর্থদন্ডের ব্যবস্থা। উক্ত ডাক্তারী পরীক্ষা এতোই বেদনাদায়ক ছিল যে, সেই সময় ওই পরীক্ষার ভয়ে অনেক বেশ্যাই কলকাতা ছেড়ে ফরাশডাঙ্গায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। নৌকায় পলায়নরত অবস্থায়, ঘরের তালা বাইরে দিয়ে লাগিয়ে রাখা অবস্থায়, বাথরুমে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় এমনকি ছদ্মবেশে পলায়নরত অবস্থায়ও পুলিশ এসে ডাক্তারি পরীক্ষার নামে বেশ্যাদের ধরে নিতো এবং সেখানে চলতো নির্যাতন। শেষ অবধি সেই পরীক্ষা হয়ে উঠেছিল এক অশ্লীলতা, অনাচার ও অত্যাচারের জায়গা মাত্র।
অনেক বেশ্যাকে এই পরীক্ষা করিয়ে মৃত্যুবরণও করতে হয়েছিল। ওই পরীক্ষার বিষয়ে ২০/০৪/১৮৬৯ সালে সম্বাদ ভাস্বর পত্রিকায় লেখা হয়, ''...তাহারা ওই পরীক্ষিত বেশ্যাগণকে প্রথমে টবে বসাইয়া দেন তাহাতে জলের সহিত জ্বলাকার পদার্থ থাকে। ওই পরীক্ষার পর গর্ভ দর্শণীয় বিশাল যন্ত্র দ্বারা দর্শণ হয়, পরে উগ্রতরো পিচকারী দেওয়া হইয়া থাকে। জনরবকারীরা বলেন ওই পিচকারীতে অনেকের উদর ফুলিয়া জীবন সংশয় হইয়াছে। অতএব উহা যে স্ত্রী দেহের উপযোগী স্বাভাবিক পিচকারী নয় তাহা অবাধেই সাব্যস্ত হইতেছে। এই পিচকারী দানের বিষয়ে পাত্রাপাত্র বিচার নাই, ডাক্তারেরা রজঃস্বলাক্ষেত্রেও উহা প্রয়োগ করিতেছেন, তাহাতে আবার অধিকতর অনিষ্ট হইতেছে, অপরিমিত রুধির ক্ষরণে দুই এক তরুণীর জীবনও গিয়াছে''।
বরাবরে মতো সুশীল সমাজ ছিল বেশ্যাদের বিপক্ষ অবস্থানে। তখনকার সময়ে সমাজসংস্কারক, বুদ্ধিজীবী এবং মহাভারতের অনুবাদক কালীপ্রসন্ন সিংহ সহ আরো অনেক শিক্ষিত সমাজের ব্যাক্তিরা বেশ্যাবৃত্তির বিপক্ষ নিয়ে ইংরেজ সরকারের প্রশংসা করে-বেশ্যাদের জন্য শহরের বাইরে আলাদা আলয় বা নিবাস তৈরির জন্য প্রস্তাব রেখেছিলেন। অবশ্য ইংরেজ সরকারের পরোক্ষ চেষ্টা ছিল এই প্রথা বিলুপ্তির। কিন্তু সরকারের চাওয়াতে কি আসে যায়, যদি না সৈন্যদল, সাধারণ, সুশীল, বিত্তবান পুরুষেরা বেশ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ না করেন। বেশ্যা প্রথা টিকে যায় এবং টিকে থাকে যুগে যুগে কালে কালে, কারণ আমরা দিনের বেলা বেশ্যাদের ঘৃণা করি এবং রাতের বেলায় আমরাই তাদেরকে বুকে টেনে নেই।
তথ্য সংগ্রহঃ মৌ ভট্টাচার্য সম্পাদিত বেশ্যাপাড়ার পাঁচটি দুর্লভ সংগ্রহ।
http://bangla.jagoroniya.com/mass-media/412/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF

বুক ভাঙ্গা আর্তনাদ নিয়ে যখন
আমি চিৎকার করে কাঁদছিলাম।
তুমি আমাকে বারবার প্রবোধ দিচ্ছিলে-
এই তো কিছুদিন পর আবার দেখা হবে,
তাড়াতাড়ি উঠো, বাসের সময় হয়ে গেলো যে!
আমি যেমন জানতাম,
তেমনি তোমারও অজানা ছিল না;
এটাই তোমার আমার জন্মের তরে-শেষ দেখা।
তবুও আমাদের বিচ্ছেদের থেকে
তোমার কাছে বাসের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তুমি জেনে খুশি হবে,
এখন আমি চাইলেই তোমার মত করে-
কাঁচা প্রেমিকের বুকে ছুরি বসিয়ে
হাসতে হাসতে ফিরে আসতে পারি।
মুহূর্তেই অস্বীকার করে কাটতে পারি
আজন্মের যত নাড়ীর বন্ধন।
খুব ছোট বেলায় পাটখড়ি জালিয়ে ধুঁয়া টেনে বিড়ি খাওয়ার চেষ্টা করতাম। হুক্কা তো প্রায়ই খেতাম। নারিকেলের খোলের ভেতরে পানি থাকতো আর তার উপরে কল্কীতে জ্বলানো হতো টিক্কা। আমাদের জমির এক কোণায় তামাক চাষ হতো, তামাক পাতা গুঁড়া করে বাতাসার মতো ছোট ছোট কাল রঙ্গের টিক্কা বানানো হতো। আর এক একটু বড় হওয়ার পর আমি আর আমার ছোট ভাই সুবোধ বিড়ির ফিল্টার কুঁড়িয়ে লুকিয়ে ফুঁকতাম। নাইন টেন থেকে গোল্ডলিফ। অনার্সে এসে বেনসন পুরোপুরি ধরে ফেলছিলাম। তারপর বেনসন লাইট। সুইচ আসার পর কয়েক মাস সুইচ খেয়েছি, এরপর আবার লাইট। আমার ধারণা বেনসন সুইচের পিপারমেন্ট মানুষের কন্ঠ কিছুটা চেঞ্জ করে দেয়। বিদেশে আসার পর অনেক ব্র্যান্ড টেস্ট করে মার্লবোরো টাচ। এটাই শেষ ব্র্যান্ড। সিগারেট ছেড়েছি বছর দেড়েক হলও। আদৌ কি ছাড়তে পেরেছি? এখনো প্রায় প্রতিদিন সিগারেটের কথা ভাবলে, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়।
দেশে প্রতি বছর বাজেট ঘোষণার পর সিগারেটের দাম নিয়ে তোলপাড় হয়। যে হারে তামাকের দাম বাড়ছে, এভাবে প্রতি বছর ক্রেতাদের পেইন না দিয়ে একবারে একটা বেনসনের দাম ২০/৩০ টাকা করে দিলেই হয়। এতে করে সরকারের আর প্রতি বছর একটু একটু করে দাম বাড়ানোর ঝামেলা থাকে না। অবস্থা যেরকম-বুঝা যাচ্ছে, সবাইকে আগের মত হুক্কা বিড়িতেই ফিরে যেতে হবে। অবৈধ তামাক চাষ বেড়ে যাবে। এমনও হতে পারে দুই এক বছর পর দেখা যাবে একটা আকিজ বিড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫/৬ টাকায়। সরকার এটা খুব ভাল করে জানে যারা ধূমপান করে, তামাকের মূল্য বৃদ্ধি করে তাদের সেই ধূমপান বন্ধ করানো যাবে না। প্রেমিক প্রেমিকার বিরহ সহ্য করা থেকেও সিগারেটের বিরহ সহ্য করা কষ্টকর। এমনও হতে পারে, যারা সিগারেট খায় তারা এক বেলা ভাত কম খেয়ে হলেও একটা সিগারেট খাবে। এতে করে স্বাস্থ্যরক্ষার নামে স্বাস্থ্যহানিটাই বাড়বে।
১) ফেনীতে এক মেয়েকে হাত পা বেঁধে ধর্ষণ করেছে তার আপন বাবা। মেয়ের মা তার নিজের বাড়ি চলে যাওয়ার পর এ-ঘটনা ঘটিয়েছে তার বাবা।
২) শরীয়তপুরে এগারো বছরের বালিকাকে ধর্ষণ করেছে তার ফুফাতো ভাই। মেয়েটির এক আত্মীয় মারা যাওয়ার পর সবাই জানাজায় অংশগ্রহণের সময় বাড়ি খালি পেয়ে মেয়েটিকে সে ধর্ষণ করে।
৩) ফেনীর ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে খালি বাড়িতে এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে ওই বাড়ির পাহারাদার। ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে এলাকার মাতব্বররা সহ স্থানীয় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মেয়েটিকে পাপ-মুক্ত করতে তওবা পড়ায় এবং নাকে খত দিয়ে দোররা মারে। এর পাশাপাশি ধর্ষিতা হয়ে সে ‘অপরাধ করেছে’ মর্মে সাদা কাগজে সই নেওয়া হয়। 
প্রথম খবরটা বেশ উদ্বেগজনক। আমি যখন ধর্ষণের জন্য পুরুষকে দোষারোপ করি তখন অনেকেই এসে অভিযোগ করেন,''আপনার বাবাও কি ধর্ষক?'' আমার বাবা আমাকে ধর্ষণ করেনি, তাই বলে আমার বাবা বা অন্যের বাবারা যে নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করে না, এটা সত্য নয়।  এই ধরনের মানসিকতা লালন পালন করার মানে হলও তাদেরকে পূর্ণোদ্দমে ধর্ষণ করতে আরও উৎসাহিত করা। কারণ তখন বাবা ধর্ষকেরা এটা জেনে ধর্ষণ করে যে, সমাজে সে বাবার অবস্থানে আছে, আর বাবারা কখনো ধর্ষণের মত গর্হিত কাজ করতে পারে না, এটা সাধারণ জনতা মানে। এই সুযোগটাকে তারা কাজে লাগাতে পারে খুব সহজে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে নারীর পোশাক ঠিক ছিল না একটা অজুহাত মাত্র। ধর্ষণের শিকার নারী যেমন বিবাহিত নাকি অবিবাহিত, সে কি বাচ্চা নাকি বুড়া, সে কি নবজাতক নাকি মৃত এগুলা ফ্যাক্ট না; ধর্ষণের জন্য একটা ছিদ্র-ধারী নারী নামক প্রাণী হওয়াটাই ধর্ষকের জন্য যথেষ্ট। তেমনি ধর্ষক ব্যক্তি বাবা-দাদা, মোল্লা-পুরোহিত নাকি সন্ন্যাসী এটা কোন ফ্যাক্ট না, সে পুরুষ এটাই হলেই যথেষ্ট। বাবারা ধর্ষক হয় না এটা ধর্ষক রক্ষার একটা অজুহাত মাত্র।   
দ্বিতীয় খবরে ধর্ষণের চেয়ে ছেলেটা জানাজায় অংশ না নিয়ে ধর্ষণ করেছে এই খবরটা প্রাধান্য পেয়েছে।  জানাজায় অংশ গ্রহণ না করে ধর্ষণ করাটা যেন বিরাট কোন অপরাধ! ব্যাটা ধর্ষণ করেছিস ভাল কথা তাই বলে এমন একটা সময়ে? এজন্য লোকে খুব অবাক হচ্ছে। এরা খুব সহজ একটা হিসেব বুঝে না ধর্ষণ করার জন্য মন্দির, মসজিদ, গির্জা, নামাজ, রোজা, জানাজা এগুলো বিষয় না, এগুলো ধর্ষণ কমাতে পারে না। যে ধর্ষণ করতে ইচ্ছুক সে জানাজা কেন অন্য যেকোনো ধর্মীয়, পারিবারিক অনুষ্ঠানের সময় ধর্ষণ করতে পারে। পৃথিবীর বেশিরভাগ লোক কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাস করে এবং আস্তিক, ধর্ম মানুষকে খারাপ কাজ করা থেকে রোধ করতে পারলে জগতে আর কোন অপরাধ থাকতো না। বরং দেখা যায় ধর্মের ফাঁকে বিভিন্ন রকমভাবে অপরাধকে পাপ নাম দিয়ে পরিত্রাণ লাভের উপায় বলে দেওয়া হয়েছে। জানাজার সময় বা মসজিদে, মন্দিরে যদি ধর্ষণ সংঘটিত হয় তখন স্রষ্টার সেই অপরাধ রোধ করার ক্ষমতা থাকে না, কিন্তু পাপ মুক্তির উপায় বাতলে দেওয়ার জন্য তিনি আছেন, তখন তিনি মহান হিসেবে বিবেচিত হন আমাদের কাছে। 
তৃতীয় ঘটনাটা আমাদের দেশের নারীদের জন্য ভয়ংকর একটি বার্তা বহন করছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করার পরও মেয়েটিকে নাকে খত দিয়ে দোররা মারা হয়েছে ইসলামিক আইনে। মেয়েটিকে সাদা কাগজে লিখতে বাধ্য করানো হয়েছে সে অপরাধী। ইসলামিক আইনে ধর্ষণের শিকার নারীও জিনা করার অপরাধে অপরাধী হয়ে থাকে। আমাকে কেউ জোর করে, হাত পা বেঁধে অথবা বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করলো, আর এর জন্য আমাকেই অপরাধী হতে হবে! এই হল ইসলামিক পবিত্র চুল ছেঁড়া বিধান! 
ধর্মগুলো আমদেরকে এভাবে তাদের নৈতিক শিক্ষা দেয়! আমাদের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীরা এভাবেই উদার ধর্মের কথা বলে নৈতিক আদর্শে আদর্শগত হতে বলছেন? এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রধানেরা নারী-বিরোধী ধর্ম এবং ধর্মের আদর্শ লালন করতে যখন উৎসাহিত করেন, তখন বিষয়টা সে দেশের নারীদের জন্য খুব শঙ্কার ব্যাপার। সৌদির মত ইসলামিক রাষ্ট্রের জন্য সেটা ঠিক হলেও বাংলাদেশের জন্য তা প্রযোজ্য হতে পারে না। ইসলাম ধর্ম যখন এপ্লাই হয় তখন তার সবচেয়ে বেশি আক্রমণের বস্তু হয়ে উঠে নারী, তা আমরা ইসলামিক দেশগুলোতে দেখেছি ও দেখতে পাচ্ছি।
আমরা তবে কি সে দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি?

http://bangla.jagoroniya.com/mass-media/361/%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95-%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%AE%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%8B
একটা মেয়েকে সমাজ, ধর্ম, পরিবার প্রায় সব দিক দিয়ে ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করে। আমাদের দেশে মেয়ে জন্মটা একটা অভিশাপ। মেয়ে জন্মের পর মেয়ে হয়ে বেড়ে উঠাটা আরও বড় অভিশাপ। কোন পিতাই চায় না তাদের সন্তানাদি কেবল মেয়ে থাকবে। বাংলাদেশে অনেক পরিবারে দেখা যায়, যতক্ষণ পর্যন্ত ছেলে সন্তান না জন্মায় ততক্ষণ পর্যন্ত সন্তান নিতেই থাকে। কেউ কেউ পুনর্বিবাহ করে। যদিও ছেলে সন্তান না জন্মানোর দায় পুরোটাই স্বামীর, তবুও দোষটা আলটিমেটলি স্ত্রীর উপরেই পড়ে। পর পর মেয়ে জন্মানোটা অশুভ হিসেবে বিচার করা হয় আমাদের সমাজে। কোন পরিবারে ছেলে জন্ম হয়ে গেলে, মেয়ের জন্মটা সেই পরিবারের জন্য খুশির খবর হতে পারে। যেহেতু মেয়েকে তার পিতার পরিবারে থাকতে দেওয়া হয় না, স্বামীর বাড়িতেও তাকে প্যারাসাইটের মত জীবন যাপন করতে হয়, সেজন্যই মেয়ে জন্মানোটাকে আমরা অত্যন্ত নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি।   
পুত্র সন্তান জন্মানো পছন্দের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ শেষ বয়সে সন্তান উপরে নির্ভরশীলতা। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীতে এমন অনেক উদাহরণ দেখা যায়, শেষ জীবনে পিতা মাতা কন্যার উপর ডিপেন্ডেন্ট হয়ে থাকে, কারণ পুত্র সন্তানেরা বাবা মায়ের দেখাশোনার দায়ভার নিতে চায় না। যদি মেয়েদেরকে বিয়ের পর নিজ বাড়ি ত্যাগ করতে না করতে হতো এবং মেয়েরা যদি সম্পত্তিতে পূর্ণ অধিকার পেতো, তবে মেয়ে জন্মটা আমাদের ধার্মিক সমাজের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে গণ্য হতো।  
একটা ছেলে শিশু এবং মেয়ে শিশু জন্মের পর প্রথম আট দশ বছর কোনরকম বিচার বৈষম্য-হীনভাবেই বেড়ে উঠে। এরপর থেকে মেয়েদের উপর যে সকল বিধিনিষেধ জারি করা হয়, তার জন্য এরপর থেকেই একটা মেয়ে মানসিকভাবে ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভোগে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতাগুলো এড়িয়ে গিয়ে সুষ্ঠু মনের বিকাশটা তাদের আর ততোটা হয়ে উঠে না। সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যা-ই করতে যায় সেখান থেকেই বাধা আসে। পড়াশোনার পাশাপাশি তাকে সবসময় একটা বিষয় মাথায় রাখতে হয়, কিছুদিন পর তাকে তার বাড়িছাড়া হতে হবে। যতোই পড়ালেখা করে বড় চাকরি করুক না কেন, তাকে একদিন পরের বাড়ি যেতে হবে, সেটাই হবে তার আসল নিবাস, সেটাই তার নিয়তি। এমনকি মরার পরে তার কবরটাও হবে সেই পর-নিবাসে। সে তার জীবদ্দশায় কখনোই জানতে পারে না তার আসল ঠিকানা কি! ভাল স্ত্রী না হতে পারলে তাকে আবার বাবার বাড়ি ফিরে আসতে হবে, তা হবে আরও বেশি নিগ্রহের জীবন। অনেক সময় বড় অংকের যৌতুক, শারীরিক নির্যাতনসহ স্বামীর বহুগামিতা, চরিত্রহীনতাকে মেনে নিয়েও তারা চায় তার সংসার বন্ধনটা অটুট থাকুক। এমন এক দোদুল্যমান নির্ভরহীনতা আর ভরসাহীনতায় প্রতিটা মেয়েই চায় যত কষ্টই সহ্য করতে হোক না কেন; তার সংসারটা যেন টিকে থাকে। আসলে টিকে থাকে না, প্রতিনিয়ত ত্যাগ, স্বামী সন্তানের অত্যাচার, হতাশা, মানসিক নির্যাতন স্বীকার করে নিয়ে নিজেরাই টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে মাত্র। এর একটু অন্যথা হলেই জীবনে যুক্ত হয় ঘোর ঘোর অশনি।    
এত এত সব প্রতিবন্ধকতা মেনে নিয়ে কেউ কেউ সামনে এগিয়ে যেতে চায়, কেউ কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, কেউ কেউ গলার স্বর উঁচু করে, কেউ কেউ সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজের মত জীবন বেছে নেয়। তখনি তার উপর নেমে আসে আরেক ধরনের অত্যাচার। তা হল নষ্টা, ভ্রষ্টা, পতিতা। যদিও আমাদের সমাজে পতিতালয় বিবাহিত বা অবিবাহিত পুরুষের এন্টারটেইনমেন্টের জন্য পুরুষেরাই বানিয়েছে এবং টিকিয়ে রেখেছে, তবুও কোন মেয়ে নির্ধারিত নিয়ম থেকে একটু সেদিকে যেতে চাইলেই পুরুষেরা তাকে 'বেশ্যা' বলে 'চরিত্রহীন নারী' বলে সমাজ ছাড়া করতে চায়। যার উদাহরণ সমাজে অহরহই বিদ্যমান। কোন মন্দির মসজিদ ভেঙ্গে গেলেও সমাজের অত বড় ক্ষতি হয় না যতটা ক্ষতি হয় কোন মেয়ে চরিত্রহীন খেতাব পেলে। একটি নির্ধারিত ফরমেটে সেই চরিত্রের নির্ধারণও করে দেয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। কোন ভয়ংকর প্রাণীও এতোটা নিষ্ঠুর নয় যতোটা নিষ্ঠুর আচরণ এ সমাজেরা পুরুষ নারীর সাথে করে। 
মানুষ হিসেবে না জন্মে কুকুর বেড়াল হিসেবে জন্মালেও এতোটা অপমান, অবহেলা, নির্যাতন, অত্যাচার, মানসিক বৈপরীত্য সহ্য করতে হয় না, যতোটা সহ্য করতে হয় নারী হয়ে জন্মালে। নারীর পেটে জন্ম নিয়ে নারীকে এমন অপমান করার মত স্পর্ধা পুরুষেরা কিভাবে রাখে তা ভাবলে রীতিমত অবাক হতে হয়। সভ্যতার বিকাশ এখানে এসেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়, মানুষ কি আদৌ মানবিক হতে পারে? না পারে না। মানুষের মত নির্দয়, লোভী, স্বার্থপর অন্য কোন প্রাণী হতে পারে না। যার ভুক্তভোগী এবং শিকার কেবলমাত্র নারী।

http://bangla.jagoroniya.com/opinion/337/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%9C%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%9F-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BF