Wednesday, July 6, 2016

https://www.facebook.com/who.annopurnadebi/posts/1604337209833487
পুরুষেরা সবচেয়ে বেশি ভয় পায় কোন নারীর মুখে তাদের তাদের বিরুদ্ধ কথা শুনতে । কারণ তারা জানে, যে অন্যায় তারা নারী জাতির সাথে করেছে বা করে চলছে ...সেসব ব্যাপারে নারীরা যদি মুখ খুলে তবে তাদের দাঁড়ানোর মত পায়ের নিচে মাটি থাকবে না ।
সেজন্য কোন নারী যদি মুখ খোলে তাদের বিপক্ষে কথা বলে , তারা তাকে 'অসতী' 'দুশচরিত্রা' ইত্যাদি খেতাব দিয়ে বা 'তোকে কিংবা তোর মাকে চুদি' অথবা 'তোর জন্মের ঠিক নাই' বা 'তোর জন্ম বেশ্যা পাড়ায়' ইত্যাদি বলে মুখখানা বন্ধ করাতে চায় । ব্যাপারখানা এমন যেন মেয়েটির জন্ম কোন নারীর যোনী দিয়ে না হয়ে কোন পুরুষের পায়ুপথে হয়েছে । তা না হলে বেঠিক জন্ম আবার হয় কেমনে ? আর বেশ্যা পাড়ায় জন্ম যেন বেশ্যালয়ে পুরুষের গমন ছাড়াই দুটি বেশ্যার মিলনে হয়ে যায় !?
তারা এটাও জানে এসব গালি দিয়ে তারা নিজেরাই তাদের চরিত্রের কাল দিক প্রকাশ করে । তবুও তারা গালি দেয় , ক্ষমতা ঠিক রাখতে তারা বোধ হয় গু ও খাইতে পারবে , তা না হলে কতটা নিচে নামলে তোর মারে চুদি, তোর এক রাতে রেট কত এই টাইপের গালি দিয়ে নিজেকে ধর্ষক-লম্পট-লুইচ্চা ও পতিত বানিয়ে , কোন মানুষ সুখ কি পেতে পারে ?!
তারা প্রথমে মুখে বলবে , তারপর গালি দেবে , তারপর মারধোর করবে অথবা মেরে ফেলার হুমকি দেবে তা না করতে পারলে দেশ ছাড়া গ্রাম ছাড়া গৃহ ছাড়া করবে । পুরুষের স্বার্থের জন্য নারী নির্যাতনের প্রশ্নে সকল সময় সকল পুরুষ একদল ও একজোট হয়ে কাজ করে ।
কিন্তু-নারীরা এক হতে পারে না , তারা নিজেদের মগজে দাসত্ববোধ এমন ভাবে ঢুকিয়েছে যে ,ঘরে বাইরে নিজের শরীরের মুভমেন্ট করা ও নিজের পোশাক আশাক নির্ধারণ সহ দৈনন্দিন সকল কাজের জন্য পুরুষের মস্তিষ্ক প্রসুত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল । জগতের সব মেয়ে যদি তাদের সীদ্ধান্তে এক হয় তবে কোন পুরুষের কি সাহস আর শক্তি আছে নারীর উপর চোখ রাংগায় ! নারীর চোখের রঙ্গেই তো তারা ভেসে যাবে দূর আকাশে ! ফুঁ !
তসলিমা নাসরিন নারীর অধিকারের কথা বলা শুরু করল ধর্ম গেল !
হুমায়ুন আজাদ পাক সার জমিন সাদ বাদ লিখল ধর্ম গেল !
সরকার নারী নীতি ২০১১ বাস্তবায়ন করতে গেল ধর্ম গেল !
আসিফ মহিউদ্দিন ধর্ম নিয়ে ব্লগে লেখালেখি করল ধর্ম গেল!
রাজীব হায়দায় ধর্ম কে ব্যাঙ্গ করে ধর্মকারীতে লিখল ধর্ম গেল !
অভিজিৎ রায় বিজ্ঞান আর যুক্তিতে ধর্মকে ধুয়ে দিল ধর্ম গেল !
ওয়াশিকুর বাবু ফেবুতে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিল ধর্ম গেল !
অনন্তও বিজ্ঞান দেখিয়ে ধর্ম কে কাঁচকলা দেখাল ধর্ম গেল !
দাঁড়িপাল্লা চুতরাপাতা দিয়ে ধর্ম কে চুলকানি দিল-- ধর্ম গেল , ধর্ম গেল !
লতীফ সিদ্দীকি হজ্জ কে ব্যবসা আর নবী তার বাপের ছেলে বলল ধর্ম গেল !
আবদুল গাফফার আল্লার নিরানব্বই নামকে কাফেরদের নাম কইলো ধর্ম গেল !
হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার !
ধর্মের লেজে আগুন লাগল আবার !
হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার !
যায় যায় ধর্ম জ্ঞান হারালো আবার !
হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার !
ইসলামের নুনুভুতিতে আঘাত আসছে আবার !
হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার !
আল্লা নবী বাঁচাতে চাপাতি লও আবার !
ধর্ম গেল বলে ডাকে ধর্ম গেল পাখি---
আমরা অন্ধ তীরন্ধাজ দাঁড়িয়ে থাকি !

Tuesday, July 5, 2016

তনুর খুনিদের না ধরে আমাদের পাহারা দিয়ে রাখা হচ্ছে। বাসার ডিশ লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে যেন তনুর সংবাদ দেখতে না পারি। কিছুদিন আগে তনুর লাশ উদ্ধারের স্থানে আমাকে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
----তনুর বাবা ইয়ার হোসেন
লেখে তো অনেকেই। এই যে এখানে যত লেখক আছেন, সকলেই বই লেখেন। তাঁদের বিরুদ্ধে তো মেলায় মিছিল হয় না। আপনার বিরুদ্ধে হয় কেন? মেয়ে হয়ে আপনি পুরুষের মত লিখতে যান কেন? সে কারণেই তো ঝামেলা হচ্ছে। আপনার লেখা আমি পড়েছি। কোনও মেয়ে কি আপনি যে ভাষায় লেখেন, সে ভাষায় লেখে? আপনার লেখা খুব অশ্লীল। আপনি মেলায় না এলে ভাল হয়। আপনি এলে মেলায় গণ্ডগোল হয়, তাই আপনি আসবেন না।
----বাংলা একাডেমীর বইমেলায় মহাপরিচালক হারুন উর রশীদ (উদ্দেশ্য তসলিমা নাসরিন)
নিহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদ ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর লেখালেখি করতেন কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ব্লগে আপত্তিজনক লেখা লিখেছে কিনা তা দেখার প্রয়োজন আছে। আগের যে হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে তাদের ব্লগ যদি দেখেন, এভাবে মানুষের ধর্মে আঘাত দেওয়া, বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া, পৃথিবীর কোনো দেশেই তা গ্রহণযোগ্য নয়।
----স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান
আজব এক দেশ বাংলাদেশ! যে দেশে অপরাধীরা সাজা না পেয়ে সাজা পায় ভিকটিমেরা।
আমি যখন পুরুষের বিরুদ্ধে কোন বিষয়ে পোস্ট দেই তখন কোন নারীবিদ্বেষী পুরুষকে আমার ডাকতে হয় না, তারা আপনি এসে কমেন্ট-বক্সে পরিচয়টা দিয়ে যায়। এটা নতুন নয়। মেয়ে আইডিগুলো কমেন্ট-বক্স উন্মুক্ত রাখতে পারে না, ভয়টা কিন্তু মেয়েদেরকে নিয়ে নয়, ভয়টা পুরুষ নামক বিচীওয়ালাদের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য । বলতে পারেন পুরুষেরাও কমেন্ট-বক্স উন্মুক্ত রাখতে পারে না। হ্যাঁ পুরুষেরাও পারে না, ভয়টা সেই একি জায়গায়, কমেন্ট বক্সে মা বোন বউকে নিয়ে টানা হ্যাঁচরা করে নারীবান্ধব পুরুষের দল। এখানে তন্ত্র না বলে পুরুষ বললে কারো যন্ত্রে আঘাত লাগলে আমার কিছু করার নেই।
নারী বিরুদ্ধে পুরুষের অত্যাচারী ধর্ষকামী মনোভাব বোঝার জন্য তত্ত্বকথা পড়তে হয় না, চোখ থাকলে--আর নিজের ঘরে নারী থাকলেই এটা স্পষ্ট বোঝার কথা। আর এখন অনলাইনের সুবাদে কমেন্ট বক্স সেটা জানার সুযোগ পুরোপুরি করে দেয়। তার পরও আপনি যদি চোখে পট্টি পরা স্বেচ্ছা অন্ধ লোক হওন, তবে ধরে নিতে হবে আপনিও তাদের একজন।
প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়, শিল্পী লেখক সাহিত্যিকদের লিঙ্গ পরিচয় বড় কথা নয়, তাদের সৃষ্টিই বড়। কথাটা আমি মানি, আপনি মানেন কিনা সেখানে আমার সন্দেহ আছে। কারণ একজন শিল্পী কে নারী বলে পুরুষেরা চাইলেই ছুদে দিতে পারে, ইন-বক্স আউট-বক্স বা পাবলিক প্লেসে। একজন পুরুষ শিল্পীকে কোন নারী আজ পর্যন্ত ছুদতে যায়নি। কেন? যায় তো নি-ই, এমনকি কোন নারী শিল্পী যদি কোন পুরুষ শিল্পী কে নিয়ে সমালোচনা করে, তবে উক্ত নারী শিল্পীকে কটাক্ষ করে তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতা সহ গভীরতা মাপার জন্য ইঞ্চি টেপ আমাদের আঙ্গুলচ্যুত হয় না। কেন?
লেখক কবি সাহিত্যিকের সমালোচনা অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। সবাই সব মত গ্রহণ করবে না, এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে তসলিমা নাসরিন সমালোচনার সবচেয়ে উপাদেয় উপাদান সেটা আমরা জানি। তিনি সরাসরি পুরুষতন্ত্র সহ পুরুষকে আক্রমণ করে কথা বলেন বলে, তার বক্তব্য হজম করতে কম বেশি সবারই কষ্ট হয়। তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে আপনি সমালোচনা করতে পারবেন ভাল কথা, তসলিমা নাসরিন কাউকে 'পুরুষ' বলে সমালোচনা করলে আপনি সেটা নিতে তো পারবেনই না, উল্টো সে কোন কোন ক্ষেত্রে আপনার থেকে ছোট, আপনার থেকে অযোগ্য বা সারাজীবন চেষ্টা করলেও আপনার মত একখান উপন্যাস বা কবিতা লিখতে পারবে না, সেই নিশ্চয়তাও আপনি তাকে দিয়ে দিচ্ছেন। কেন আপনি তসলিমার সমালোচনার যোগ্যতা রাখেন, আর তসলিমা নাসরিন কেন আপনার মত বিখ্যাত কোন পুরুষের সমালোচনা করতে পারবে না? আপনি তসলিমা নাসরিনের সীমানাটা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন, কেন বলুন তো? কোন সাহসে? কারণ সে নারী লেখিকা আর সে আপনাকে 'পুরুষ' বলে কিছু কড়া কথা বলে কটাক্ষ করেছে। এখানে আপনি তাকে 'নারী' বলে উল্লেখ না করলেও আপনার আচরণই বুঝিয়ে দিচ্ছে আপনার স্পর্ধার কারণ।
তসলিমা নাসরিন অবিবেচকের মত কথা বলেছেন, আলোচনা উস্কে দিচ্ছেন, অশ্লীল লিখেছেন, ফালতু লিখেছেন, এটা নতুন নয়। আজকে আবার নতুন করে উল্লেখিত হয়েছে, কারণ তিনি এমন একজনকে নিয়ে লিখেছেন যিনি আবার আপনার পছন্দের কবি-লেখক-শিল্পী। এজন্য আপনি তার সমালোচনা করে যা ইচ্ছে তাই বলে নারীবাদ আর পুরুষ বিদ্বেষের সীমারেখা দেখিয়ে দিচ্ছেন। আপনি তাকে নতুন করে নারীবাদ শেখাচ্ছেন। কিন্তু আপনি ভাবছেন না, আপনার মত একই ভাবে উক্ত লেখক-কবি-শিল্পী কে তসলিমার ভাল না লাগতে পারে, তার মাঝে সে নারীবিদ্বেষ দেখতে পারেন, সীমাবদ্ধতা দেখতে পারেন, উক্ত লেখক-কবি-সাহিত্যিকের লেখা তার অপছন্দ হতে পারে; এটা কেন মানতে পারছেন না? আপনি কিন্তু নারীবাদ আর পুরুষবিদ্বেষ নতুন করে বোঝাতে গিয়ে আপনার সুপ্ত নারী-বিদ্বেষটাই দেখাচ্ছেন! বুঝতেছেন না? আরেকবার পড়েন।
শুরুতে ফিরে যাই। নারীর বিরুদ্ধে পুরুষতন্ত্র দিনের আলোর মত স্বচ্ছ হলেও, এটা গ্রহনযোগ্য; এটা আমাদের দৃষ্টিতে কোনভাবেই নারী বিদ্বেষ নয়। কিন্তু পুরুষত্বন্ত্রের বিরুদ্ধে নারীবাদ ফুলকির মতো জ্বললেও, ওটা অগ্রহনযোগ্য, কারণ এটা পুরুষবিদ্বেষ। নারীবিদ্বেষ হয়েছে, হচ্ছে, হবে----কিন্তু পুরুষতন্ত্র তথা পুরুষের বিরুদ্ধে কিছু বললেই তা পুরুষবিদ্বেষ উপাধি পাবে, আর পুরুষবিদ্বেষটা কোন ভাবেই সহী বিদ্বেষ নয়। এই পৃথিবীতে সবচেয়ে সহী, সবচেয়ে জনপ্রিয়, সবচেয়ে প্রয়োগকৃত বিদ্বেষ নারী বিদ্বেষ। বিদ্বেষের প্রতিযোগীতায় এক্ষেত্রে পুরুষেরা বরাবরই পরাজিত থাকতে পছন্দ করে।
দ্রঃ তনার পক্ষে যদি আমি মুখ খুলি আপনারা আমাকে তনাদ্ধ, মুরিদ, উম্মত, চ্যালা অনেক কিছুই উপাধি দিবেন। আপনারাও একই ভাবে কারোর পক্ষে বলতে গিয়ে তনার বিরুদ্ধাচারণ করছেন, আপনিও কি ত্যানার অন্ধ, মুরিদ, উম্মত অথবা চ্যালা?
আপনার বক্তব্যের নারীবাদীতা যখন ''অতি নারীবাদীতা" ট্যাগ খায় তখন খুব সাধুতার আড়ালে আপনার নারী-বিদ্বেষটাই প্রকাশ পায়। সেটা অতি না অল্প বিবেচ্য নয়। নারীবাদীতা-কে আপনি কটাক্ষ করে অতি নারীবাদীতা বলতে পারেন। নারী বিদ্বেষ টা অতি আর অল্প নির্ভর করে না। নারীবিদ্বেষ অল্প হলেও নারীবিদ্বেষ, বেশি হলেও তা-ই।
"আমরা যারা নারীবিদ্বেষী সমাজে বসবাস করেও নারীবাদ চর্চা করি, এদের মত বালছাল উগ্র নারীবাদী মুহূর্তেই আমাদের খারিজ করে দেয়; কতো বড় সাহস!" জী ভাই আপনি অনেক নারীবান্ধব পুরুষ,নারীর অধিকার আন্দোলনে কতোটা নারীবাদী সেটা আপনার কথাতেই প্রকাশ পাচ্ছে। মনে হচ্ছে নারীকে করুণা করতে নারীবাদী সাজছেন। আর এই কারণেই বালছালগুলা আপনারে গুনায় ধরে না।
"এদের কাছে পুরুষ মানেই ধর্ষক।"
পুরুষ সবকিছুতে শ্রেষ্ঠত্ব পাইলেও, নারীর কাছ থেকে এর চেয়ে উত্তম উপমা পাওয়ার মত কর্ম করতে পারে নাই। এইখানেও দোষ কি নারীবাদীর? কথাটা নারীর পোশাকই ধর্ষণের কারণের মত শোনায় না?
ভাবতেছেন আমার মত বালছালরে আনফ্রেন্ড করবেন? করেন, ভুলেও তনারে কইরেন না।
যখন যাকেই ভালবেসেছি, সে আমার--
প্রেমিক হোক, বন্ধু হোক, হোক বা স্বজন
তাকে নিজের সব উজাড় করে দিয়েছি।
একটু ছিটে ফোটাও নিজের জন্য রাখিনি..
হোক তা সময়, হোক তা কর্ম, 
হোক না ঘণ্টার পর ঘণ্টা শ্রম--
হোক বা ভালবাসায় মিশে যাওয়ার আহ্বানে
-----উদ্দাম একাগ্রতা।
আমি তোমাদেরকে ভালবেসে জেনেছি--
মানুষ যে কতভাবে-----
ভালবাসা কেবল নিতেই জানে।
আর কতভাবে যে তারা মানুষকে
ভাল না বাসার খেলা খেলতে জানে,
ভাল না বাসতে চাওয়ার কত শত বায়না যে মানে!
তা তোমাদের সান্নিধ্য না পেলে বুঝতে পারতাম না।
-----একারণে কৃতজ্ঞতা।
সংকীর্ণতা অন্য সব ক্ষেত্রে মানালেও
ভালোবাসার ক্ষেত্রে কি মানায় বলো?
এজন্য তোমাদেরকে ছাড়তে হলো প্রিয়।
অল্প বিস্তর ভালবাসা আমাকে আপ্লুত করলেও
বেশি বেশি ভাল বাসতে বাসতে আমি ক্লান্ত!
এখন আমার শুধু--
আমার মত করে একটু ভালোবাসা দরকার।
-----এবার তবে নিরবতা।
কবিতা এক:
এরা দেবী, এরা লোভী, যত পূজা পায় ততো চাই আরও!
ইহাদের অতি লোভী মন
একজনে তৃপ্ত নয় এক পেয়ে সুখী নয় যাচে বহুজন।
কবিতা দুই:
বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা কিছু এল পাপ তাপ বেদনা অশ্রুবারি,
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর অর্ধেক তার নারী।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও পরিবারে বেড়ে উঠা অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন মানুষের কাছে এই কবিতা গুলো খুব পরিচিত। নারীর প্রতি বিদ্বেষ হিংসা ও ঘৃণা প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা পূজারিণী কবিতার এই অংশটাকে কপি পেস্ট করি। আর যখনি সাম্যের গান গাইতে হয় আসে তখন নারী কবিতার উপরোক্ত অংশ কপি পেস্ট করি। এগুলো যে কতোটুকু পরস্পর বিরোধী বক্তব্য সেগুলো একবারও ভেবে দেখি না। প্রেম প্রকাশে আরও দুটো লাইন বহুল প্রচলিত, '“তাজমহলের পাথর দেখেছ, দেখেছ কি তার প্রাণ, ভিতরে তার মমতাজ নারী, বাহিরে শাহজাহান”। এখানে শাহজাহানের হেরেমখানা বা বহুবিবাহ, তার নিষ্ঠুরতার কথা আড়ালই থাকে। সবাই জানে শাহজাহান কত্ত মস্ত বড় প্রেমিকই না ছিলেন।
সাদা চোখে কবির কবিতা বিচার করতে আমরা যাই না। কারণ কবি এখানে বিখ্যাত, আমাদের জাতীয় কবি। কোন মানুষ যখন বিখ্যাত হয়ে যায় তখন তার সব রচনাই এভাবেই সমাদৃত হয়। যারা নিতে পারে না তারাই ব্যতিক্রম। তারাই মাথা খাটিয়ে ভাল মন্দ বিচার করে। কিন্তু উক্ত কবির জীবনী দিয়ে আমরা তাঁর কবিতা বিচার করি না। একারণে যারা কবির শোভাকাংখী তাদের ব্যক্তি-আক্রমণ মূলক কথা বলে বিরুদ্ধাচরণ করে বা কবির অনুরাগী ভক্ত পাঠকদের কবির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জায়গায় গিয়ে অশ্লীল, কুৎসিত, যুক্তিহীন ট্যাগ ছুঁড়ে দেই না। কিন্তু তসলিমা নাসরিনকে বিবেচনায় তাঁর সমর্থক বলেন আর তাঁর ভক্ত বলেন অথবা তাঁর অনুরাগী পাঠক বলেন, তসলিমার মত বিখ্যাত ব্যক্তির নাগাল না পেয়ে তাদের বাল ধরে টানাটানি করেন। ধরেই নিয়েছেন তসলিমা আপনাদের বাপের সম্পত্তি, তাকে নিয়ে আমরা যা ইচ্ছা তা বলব, করব, কে আসবে বলার তারও জাত উদ্ধার করবো এবং করছেনও। এখানে কি আরও স্পষ্ট করে বলতে হবে তসলিমা কে আপনি লিঙ্গ-দিয়ে বিচার করছেন নাকি তাঁর লেখা দিয়ে?
সব পুরুষের ভেতরেই নারী বিদ্বেষ বিদ্যমান, কারোর কম কারোর বেশি। আমাদের সমাজ আর ধর্ম এগুলোই শিক্ষা দেয়। যৌবনে প্রেম করা অবস্থায় সেটা কিছুটা কমে গেলেও বা তারা কম বেশি নারীবাদী হলেও পুরুষ নামক প্রতিষ্ঠিত মুল্লুকে আঘাত করে কোন কথা আসলেই তাদের আসল রূপটা বেরিয়ে আসে। নারী আর তার তার প্রতিনিয়ত ঘটা অন্যায় নিয়ে লেখালেখি করলেই আপনি যদি নিজেকে নারীবাদী ভেবে বসে থাকেন, সেটা যে ভুল তা আপনার নিজের চেয়ে ভাল আর অন্য কেউ জানে না। কারণ আপনার গড়া নারীবাদের বাইরে কোন নারী যাইতে চাইলেই তাকে লেখালেখির সীমা সহ সমস্ত ক্ষেত্রে, এমনকি// ''নারীবাদীতা'' শব্দেও নারীরা নারীকে জাস্ট পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে, তারা আসলে মানুষ হতে পারেনি// এসব বিচারটা আপনি করে ফেলছেন। আপনার মত চোখ কান হাত পা মুখ থাকার পরও নারীকে আপনি যে মানুষ না ভেবেই বিচারক সেজে বসে আছেন! কতোটা ভয়ঙ্কর আপনার চিন্তা! নিজেকে নারী জাতির জন্য খুব কল্যাণকর ভাবছেন? মূর্খরাও ভাল; আপনার মত অশিক্ষিতরাই কালে কালে নারীর পথ রোধ করে পুরুষতন্ত্র টিকিয়ে রেখেছে। আপনারা খুব ভাল করে জানেন কিভাবে না মেরেও নারী কে পঙ্গু করা যায়, আপনারা জানেন কিভাবে নারী পুরুষ সবাইকে কাঁচকলা খাইয়ে নিজের নামে নারীবাদের কৃতিত্ব লিখিয়ে নেওয়া যায় এবং কি কি করলে নারী মানুষ হওয়ার যোগ্যতা পায়।