খুব ছোট বেলায় পাটখড়ি জালিয়ে ধুঁয়া টেনে বিড়ি খাওয়ার চেষ্টা করতাম। হুক্কা তো প্রায়ই খেতাম। নারিকেলের খোলের ভেতরে পানি থাকতো আর তার উপরে কল্কীতে জ্বলানো হতো টিক্কা। আমাদের জমির এক কোণায় তামাক চাষ হতো, তামাক পাতা গুঁড়া করে বাতাসার মতো ছোট ছোট কাল রঙ্গের টিক্কা বানানো হতো। আর এক একটু বড় হওয়ার পর আমি আর আমার ছোট ভাই সুবোধ বিড়ির ফিল্টার কুঁড়িয়ে লুকিয়ে ফুঁকতাম। নাইন টেন থেকে গোল্ডলিফ। অনার্সে এসে বেনসন পুরোপুরি ধরে ফেলছিলাম। তারপর বেনসন লাইট। সুইচ আসার পর কয়েক মাস সুইচ খেয়েছি, এরপর আবার লাইট। আমার ধারণা বেনসন সুইচের পিপারমেন্ট মানুষের কন্ঠ কিছুটা চেঞ্জ করে দেয়। বিদেশে আসার পর অনেক ব্র্যান্ড টেস্ট করে মার্লবোরো টাচ। এটাই শেষ ব্র্যান্ড। সিগারেট ছেড়েছি বছর দেড়েক হলও। আদৌ কি ছাড়তে পেরেছি? এখনো প্রায় প্রতিদিন সিগারেটের কথা ভাবলে, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়।
দেশে প্রতি বছর বাজেট ঘোষণার পর সিগারেটের দাম নিয়ে তোলপাড় হয়। যে হারে তামাকের দাম বাড়ছে, এভাবে প্রতি বছর ক্রেতাদের পেইন না দিয়ে একবারে একটা বেনসনের দাম ২০/৩০ টাকা করে দিলেই হয়। এতে করে সরকারের আর প্রতি বছর একটু একটু করে দাম বাড়ানোর ঝামেলা থাকে না। অবস্থা যেরকম-বুঝা যাচ্ছে, সবাইকে আগের মত হুক্কা বিড়িতেই ফিরে যেতে হবে। অবৈধ তামাক চাষ বেড়ে যাবে। এমনও হতে পারে দুই এক বছর পর দেখা যাবে একটা আকিজ বিড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫/৬ টাকায়। সরকার এটা খুব ভাল করে জানে যারা ধূমপান করে, তামাকের মূল্য বৃদ্ধি করে তাদের সেই ধূমপান বন্ধ করানো যাবে না। প্রেমিক প্রেমিকার বিরহ সহ্য করা থেকেও সিগারেটের বিরহ সহ্য করা কষ্টকর। এমনও হতে পারে, যারা সিগারেট খায় তারা এক বেলা ভাত কম খেয়ে হলেও একটা সিগারেট খাবে। এতে করে স্বাস্থ্যরক্ষার নামে স্বাস্থ্যহানিটাই বাড়বে।
No comments:
Post a Comment