Tuesday, April 26, 2016

বাংলাদেশের মত দুর্ভাগা দেশ কি আর আছে! এইখানে ধরে ধরে মেধাবী মননশীল মানুষ গুলোকে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়। যাদের কিছু সামর্থ্য আছে তারা দেশ থেকে পালিয়ে বাঁচার চেস্টার করে। আর বাকিরা প্রাণ হাতে নিয়ে উদ্ভ্রান্ত জীবনযাপন করে। এরা কেউই খুনি নয়, ধর্ষক নয়, লুটেরা নয়, যুদ্ধবাজ নয়। এরা সবাই চিন্তাশীল লেখক। এরা তাদের লেখার মাধ্যমে জাতিকে আলোকিত করতে চায়। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এরা কেউই কোটিপতি নয়। এরা নিতান্তই দরিদ্র মানুষ। বৈষয়িক ভাবে দরিদ্র হলেও এরা চিন্তার দিক থেকে পৃথিবীর অন্য দেশের প্রগতিকামী লোকের মতই উজ্জ্বল এবং ধনী।
এই অবস্থায় দেশের রক্ষক সরকার যখন এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যায় এবং এও বলে দেয় লেখালেখির কারণে কেউ মারা পরলে সেই দায় সরকারের নয়। তখন সরকারকে আর রক্ষক মনে হয় না, রাক্ষস মনে হয়। যে দেশের সরকার প্রধানরা রাক্ষস হয়, সে দেশের মেধাবীরা তার খাদ্য হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ সরকারের ভুলটা তাদের চোখেই প্রথম পড়ে।
১) এই তোর নাম কি?
--রঞ্জন সাহা।
হালায় মালাউল। ধর কোপা।
২) এই তোর ধর্ম কি?
--মুসলিম শিয়া।
হালায় সহী মুসলিম না। ধর কোপা।
১) এই তোর নাম কি?
--রঞ্জন সাহা।
হালায় মালাউল। ধর কোপা।
২) এই তোর ধর্ম কি?
--মুসলিম শিয়া।
হালায় সহী মুসলিম না। ধর কোপা।
৩) এই তুই কি করস?
--ছবি আঁকি।
হালায় চিত্রকর। ধর কোপা।
৪) এই তোর হাতে এইটা কি?
--গীটার।
হালায় গান বাজনা করে। ধর কোপা।
৫) এই তোর সাথে এই মাইয়া কে? কই যাস?
--আমার জিএফ। ঘুরতে যাই।
হালায় জেনাকারী। ধর কোপা।
৬) এই তুই নাকি শিক্ষক? কি পড়াস?
--বিজ্ঞান পড়াই।
হালায় কোরান হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করে। ধর কোপা।
৭) এই তুই বোরকা ছাড়া কই যাস?
--শফিকের সাথে সিমেনা দেখতে যাব।
শালী দুশ্চরিত্রা ব্যভিচারিণী। ধর কোপা।
৮) এই তুই ফেবু তে কি লিখিস?
--নবীর জীবনীর কিছু কিছু অংশ তুলে ধরে মাঝে মাঝে লেখালেখি করি।
হালায় নবীর কটুক্তিকারী। ধর কোপা।
৯) এই তুই নাকি ব্লগার?
--আমি 'ইসলামের জ্যোতি' নামে ব্লগে লিখেছি দুই একবার।
হালায় নাস্তিক। ধর কোপা।
১০) এই শুনছি তুই নাকি শেলীর লগে প্রেম করস?
--হ্যা করি।
হালায় বিয়া আগেই প্রেম করে। ধর কোপা।
আগামীকাল কার পালা?
একজন সংসারী আদর্শ পুরুষের লক্ষন সমুহঃ
* তারা গোসল করবে খোলা লুঙ্গির উপরে দাঁড়িয়ে, ওটা ওভাবে ফেলেই বের হয়ে যাবে।
* তারা গোসল শেষে বাথরুমের পানি কখনোই মুছবে না, এর উপর দিয়েই চপ চপ করে পানি সহ বাইরে বের হয়ে যাবে।
* তারা তাদের কাপড় চোপর কোথায় আছে জানবে না, কিন্তু শুক্রবারে পাঞ্জাবী ধূয়া এবং ইস্ত্রি করা চাইবে।
* তারা বেডরুমে গন্ধওয়ালা জুতা মোজা খুলে ফেলে রাখবে।
* তারা কখনোই রান্নার ধারে কাছে যাবে না, কিন্তু মাংসে তেজপাতার পরিমাণ বেশি কেন বা ভাত একটু শক্ত কেন এই নিয়ে স্ত্রীকে রন্ধন-বিদ্যা শিক্ষা দেবে।
* তারা অপর পুরুষের কাছে নিজের স্ত্রীকে ছোট করে কথা বলবে।
* তারা ঘুম থেকে উঠে কখনোই বিছানা গোছাবে না।
* ভেজা তোয়ালে যেখানে সেখানে ফেলে রাখবে।
* ছেলে মেয়েকে কখনোই পড়াবে না। পরীক্ষায় খারাপ করলে উল্টো গালিগালাজ করবে।
* তারা ছেলেমেয়েকে কখনোই স্কুলে আনা নেওয়া করবে না।
* ছেলে মেয়ের স্কুলে বা খেলায় কখনোই বাবার উপস্থিতি থাকবে না, কিন্তু সন্তান স্কুলে ভাল করলে সব ক্রেডিট বাবার।
* তারা কখনোই তার স্ত্রী বাইরে কাজ করুক চাবে না, ঘরে বসে সিরিয়াল দেখলেও স্ত্রী আনকালচার্ড বলে নাক সিটকাবে।
* তারা ভাত খেয়ে কখনোই প্লেট ধোবে না, এমনকি নিজের গ্লাসে পানিও ভরে খাবে না।
* তারা সন্তানের লালন পালন জীবনেও পুরা একদিন করেছেন কিনা সন্দেহ। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা বাচ্চা দেখা শোনা করেই মহাভারত উদ্ধার করেছেন এমন ভাব ধরে আহ্লাদে তিনদিন বসে খাওয়ার দাবী তুলবেন।
(আরও যোগ করতে পারেন।)
এই কাজগুলো যিনি করে দিতে পারেন ঠিকমত তিনিই সংসারী আদর্শ নারী। এই হলোএকজন সংসারী আদর্শ পুরুষ এবং আদর্শ নারীর সংজ্ঞা। দেখুন ব্যাক্তি বিশেষে আদর্শ কিভাবে বদলিয়ে যায়।
আপনি আপনার দেশ, পরিবার, বন্ধু-আত্মীয়, পরিচিত পরিবেশ, আপনার বিছানা, সকাল সন্ধ্যা, দেশ ছেড়ে বিদেশে এলেন। এমন এক দেশে এলেন, যেখানের কোন গাছের নাম আপনি জানেন না, কোন মাছের নাম না, কবুতর ছাড়া কোন পাখির নাম না, দুই একজন স্বদেশী ছাড়া কোন মানুষকেও আপনি চিনেন না। ওরা আপনার মত পোশাক পড়ে না, আপনার খাবার খায় না, আর আপনার আর তার ধর্মের অবস্থান দুই মেরুতে। ১৫/২০ দিনে সূর্যের মুখ দেখা যায় না,তাপমাত্রাও হিমাংকের নিচে, মাঝে মাঝে বরফে ছেয়ে সাদা হয়ে যায় চারপাশ। আপনি কি এই অসহায় অবস্থায় মরে যাবেন না তারা আপনাকে মেরে ফেলবে, এটা আপনি বা তারা কেউই করবেন বলে মনে হয় না।
তেমনি প্রতিটা মানুষের চিন্তা-চেতনা, দর্শন, মতাদর্শ, গড়ে উঠে সমাজ পরিবেশ সর্বোপরি সে কি শিক্ষা গ্রহণ করেছে তার উপর। আপনার মনে জিজ্ঞাসা এলে, প্রশ্ন এলে আপনি জিজ্ঞাসা করবেন, যুক্তিসংগত উত্তর খুঁজবেন। কোন কিছু মানব জাতির মসৃণ চলার পথে বাঁধা মনে হলে, অযৌক্তিক কিম্বা ক্ষতিকর মনে হলে, এমন কোন নিয়মাদি বা সিস্টেম পেলে আপনি প্রতিবাদ করবেন। আপনি চাইলে সুশীল হতে পারেন। সব কিছু জানিয়া বুঝিয়া না খেপিয়া বিষবৃক্ষের গোঁড়ায় জলদান করিতে পারেন। সবাই তা পারে না। কেউ কেউ একটু নড়েচড়ে উঠে, কেউ আবার এইসব কুপ্রথা আর তার দ্বারা কৃত অন্যায় ও অনিষ্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, আওয়াজ করে, কলম তোলে, এখন অবশ্য কীবোর্ড চাপায়। মানব সভ্যতা এইভাবেই এগিয়েছে, এইভাবেই এগোয়।
বাহ্যিক এবং অন্তর্নিহিত সম্পূর্ণ অমিল থাকা সত্যেও ওই বিরুদ্ধ দেশে বিপরীত পরিবেশে আপনাকে কেউ গির্জায় যেতে বাধ্য করেনি। আপনি সেখানে অনেক নিরীশ্বরবাদী দেখেছেন প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘুরে বাড়াতে। আপনি আপনার মত চলতে পেরেছেন দিব্বি। কিন্তু আপনার দেশের কোন ব্যক্তি আপনার ধর্মের প্রচলিত ন্যায় বিরোধী কর্মকাণ্ড অথবা অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক হাস্য কর কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বললে, আপনি তাকে হত্যা করবেন বা আপনার ভয়ে তাকে পালিয়ে দেশত্যাগ করতে হবে বা আপনি তাকে নির্বাসিত করবেন, এটা কেমন শিক্ষা? আপনার মানসিকতায় মানব হত্যার মত সংস্কৃতি যাতে বাসা না বাঁধে এর জন্য যেই লোকটি কথা বলতেন, তাকেই আপনি হত্যা করলেন?
আপনি সেই দেশে তাদের মত শুকর খান না বলে, তাদের ধর্ম না মেনে শুকরের বাচ্চা বলে কটাক্ষ করেন বলে, বা পাঁচ-বেলা আপনার মত ফ্লোরে মাথা ঠুকে না বলে অথবা মালাউন কাফের মুরতাদ বলে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকান বলে তারা কিন্তু আপনাকে মারতে আসেনি। অথচ আপনি মারতে আসেন, আপনি আক্রোশে রাগে হিংসায় ঘৃণায় আক্রমণ করতে আসেন আপনার পরিচিত অঙ্গনের নাস্তিক, হিন্দু, উপজাতি সহ আরও বিধর্মীদের।
আপনি ভুলে যান আপনার এই একমাত্র পরিচিত আল্লা ছাড়া আরও ঈশ্বর আছে পৃথিবীতে, আরও অঞ্চল আছে যেখানেও এই ধর্ম ছাড়া লোকে সুখে শান্তিতে বসবাস করে, আরও ফুল পক্ষী লতা পাতা বরফ হিম হাওয়া আছে যা আপনার অচেনা। ওখানেও মানুষ বাঁচে, মানুষ স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তাদেরও ঈশ্বর আছে আপনারই মত। ওখানেও নাস্তিক আছে যারা ঈশ্বরের অস্তিত্বে অস্বীকার করে। তারা আপনি ভিন্নবর্ণ ভিন্নভাষী ভিন্নধর্মী বলে আপনাকে কোপাতে আসবে না। আপনি যাবেন, আপনি যান। কারণ আপনার জগত এটুকু জানা শোনার বোঝার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, এর বেশী কেউ বললে, বুঝলে, ব্যাখ্যা করলে আপনার কাছে সীমালঙ্ঘন মনে হয়, আর সীমা-লঙ্ঘনকারীকে হত্যার নির্দেশ রয়েছে আপনারই পরম পূজনীয় গ্রন্থে। মানুষ দেখতে দেখতে খায় (পড়ে), খাইতে খাইতে (পড়তে পড়তে) শিখে, শিখতে শিখতে সভ্য হয়। আপনি দেখবেন অন্ধকার, খাবেন নোংরা, আপনি শিখবেন অসভ্যতা আর আপনার আচরণও হবে কালো বর্বর এবং কুৎসিত, এটাই স্বাভাবিক।

Friday, April 22, 2016

এরিস্টটলের সময়ে তিনি ছিলেন মহানবীর মত সম্মানীয়। এরিস্টটলের (৩৮৪-৩২২ খ্রীঃ পুঃ) পূর্বে প্লেটোও তার ছাত্রদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছিলেন পৃথিবী স্থির। সূর্য, চন্দ্র এবং অন্যান্য সকল নক্ষত্ররাজি পৃথিবীকে ঘিরে পদক্ষীন করে। কোপার্নিকাসের (১৪৭৩-১৫৪৩) আগে পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থও ভূ-কেন্দ্রিক এই মডেলটি বিশ্বাস করতো। কোপার্নিকাসের আগে ভূ-কেন্দ্রিক এই মডেলের বিরোধিতা করেছিলেন এরিস্টাকাস্ট (৩১০-২৩০ খ্রী পূঃ) । তিনি অতি সাহসের সাথে এরিস্টটলের মতবাদ কে অস্বীকার করে বলেছিলেন পৃথিবী এক বছরে সূর্যের চারদিকে ঘুরে আসে, যাকে আমরা এখন বার্ষিক গতি বলে জানি। এমনকি তিনি এক দিনে পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর আবর্তন করে (আহ্নিক গতির কথা) সেটাও বলেছিলেন। কিন্তু তিনি তার মতবাদের পক্ষে সেসময় কোন গাণিতিক প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। আর এরিস্টটলের প্রতিপত্তি ছিল বিশাল। তার অনুরাগীর সংখ্যা ছিল অনেক, বিধায় এরিস্টাকাসের 'সূর্যকেন্দ্রিক'(Heliocentric)মতবাদ খড়-কুটোর মত ভেসে হারিয়ে যায়। গ্রীক জোতির্বিদ টলেমীর ১৪০ খৃষ্টাব্দে দেওয়া 'সর্বকালের শ্রেষ্ঠ' ভূ-কেন্দ্রিক ভুল মডেলটি তের শত বছর ধরে রাজত্ব করে। যা পরে প্রথম বাঁধার সম্মুখীন হয় পোলিশ এক যাজক নিকোলাস কোপার্নিকাসের মাধ্যমে। তিনি পৃথিবীকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে সূর্যকে কেন্দ্রে এনে একটি বই লিখে ফেলেন ১৫৩০ সালে। বইটি লেখার ১৩ বছর পর ছাপানো হলেও রোমান ক্যাথলিক চার্চ এই বইটিকে ৭৩ বছর নিষিদ্ধ করে রাখেন।
অতঃপর গ্যালেলিও (১৫৬৪-১৬৪২) টেলিস্কোপ আবিষ্কার করে দেখলেন চাঁদের পাহার এবং বৃহস্পতির উপগ্রহ যারা বৃহস্পতির চারদিকে ঘুরে। তিনি আরও দেখেন শুক্র গ্রহও আমাদের চাঁদের মত একটি পূর্ণ চন্দ্র-কাল অতিক্রম করে। এ থেকে তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারেন পৃথিবী সৌরজগতের কেন্দ্র নয়। যা কিনা কোপার্নিকাসের মতবাদ সমর্থন করে। কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ সমর্থনের কারণে ১৬০০ সালে জিওদার্নো ব্রুনো কে রোমে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। মরার আগ মুহূর্তেও তাকে বলা হয় পৃথিবীকেন্দ্রিক মতবাদ কে স্বীকার করে নিতে, কিন্তু তিনি মরতে রাজি ছিলেন কিন্তু মিথ্যা গ্রহণ করেননি। গ্যালেলিও তার মতবাদ ১৬১০ সালে (The Starry massenger)বইয়ে প্রকাশ করেন। যা তার জন্য কাল হয়ে উঠে।
গ্যালেলিও খুব উৎসাহ ভরে তার মতবাদ চারদিকে প্রচার করেন। অবশেষে ১৬১৬ সালে তাকে 'ধর্মবিরোধী'(heretical) হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়। অবশেষে ১৬৩২ সালে টলেমী আর কোপার্নিকাসের বিশ্বতত্ত্বের আলোচনা করে তার বিশ্ব বিখ্যাত ''Dialogue Concerning the Two Chief Systems of the World- Ptolemaic and Copernican'' বই লিখেন। বইটি ছিল মোটামুটি কথোপকথন ভিত্তিক। তিন জনের কথোপকথন একজন কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের সমর্থক, অন্যজন এরিস্টটেলীয় দার্শনিক টলেমীর পৃথিবীকেন্দ্রিক মতবাদের সমর্থক, অন্যজন নিরপেক্ষ। ইতালীয় সহজলভ্য ভাষায় বইটি রচনার কারণে সাধারণের কাছে বইটি বুঝতে সহজ হয় এবং কোপার্নিকাসের সমর্থক চরিত্রের তুখোড় যুক্তির কারণে এরিস্টটলীয় চরিত্রটি নাজেহাল হয়ে যায়।
১৬৩৩ সালে চার্চ পুনরায় গ্যালেলিও কে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করে। গ্যালেলিওর তখন বৃদ্ধ বয়স ,সূর্যের দিকে অবিরাম তাকিয়ে থাকার কারণে শেষ বয়সে গ্যালেলিও অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, বয়সের ভারে ন্যুব্জ। এই অবস্থায় অসুস্থ বৃদ্ধ বিজ্ঞানীকে টেনে হেঁচড়ে ফ্লোরেন্স থেকে রোমে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানে লোকে সম্মুখে হাঁটু মুড়ে বসে সবার সামনে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয় এবং তাকে স্বীকার করতে হয় এতো দিন তিনি যা যা লিখেছেন ও প্রচার করেছেন তা সম্পূর্ণ ধর্মবিরোধী, ভুল এবং মিথ্যা। তিনি এও বললেন পৃথিবী সৌরজগতের কেন্দ্রে এবং স্থির অনড়। জীবন বাঁচাতে তিনি মিথ্যে বলেছিলেন। শোনা যায় একবার তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে এও বলেছিলেন, ''তারপরও পৃথিবী কিন্তু ঠিকই ঘুরছে''। নিজ গৃহে বন্দী থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান ১৬৪২ সালে।
গ্যালেলিওর মৃত্যুর ৩৫০ বছর পর ১৯৯২ সালের ৩১ শে অক্টোবর পোপ জন পল-২ ক্যাথলিক চার্চের পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য দিয়ে স্বীকার করেন, চার্চের গ্যালেলিওর প্রতি তখনকার আচরণ সঠিক ছিল না।
তথ্যসংগ্রহঃ আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী---অভিজিত রায়
''একমাত্র ইসলাম ধর্মই ব্যবহারিক জীবনে গণতন্ত্র, প্রগতি ও উদারতার শিক্ষা দিয়েছে।''
---ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
মাননীয় উপাচার্য প্রথমত বলেছেন, ইসলাম গণতন্ত্রের শিক্ষা দেয়। গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো ভোট সহ আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন এবং তৈরির ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সকল নাগরিকের সমান অধিকার। আপনারা সবাই জানেন সৌদি আরবে প্রথম নারী ভোট প্রদান করেছে গতবছরের(২০১৫) ১২ই ডিসেম্বর। যেখানে পুরুষ ভোটার নিবন্ধন এর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার জন এবং নারী ভোটার নিবন্ধিত হয় মাত্র এক লাখ ৩০ জন । সেই নির্বাচনে ৫৯৩৮ জন পুরুষ প্রার্থীর সাথে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল মোটে ৯৭৮ জন। হাস্যকর-ভাবে সেই সব নারী প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন পুরুষ প্রতিনিধি, নারীরা থেকেছে পর্দার আড়ালে। যেই ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা দাসী সঙ্গমকে কোরানের আয়াতের মাধ্যমে বৈধ করে, পোষা প্রাণী নিষিদ্ধ করে, অপরিচিত নারী পুরুষের দেখা সাক্ষাত নিষিদ্ধ করে, বয়স ৪৫ এর কম হলে কোন নারীর পুরুষ ছাড়া একা ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করে, এমনকি চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, ছবি আঁকা পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে। এছাড়াও সৌদি আরবে ইসলাম অনুসারে অন্য দেশের লোকদের প্রকাশ্যে ধর্ম পালন নিষিদ্ধ, ইসলামিক নিয়মে নারীদের জন্য সমস্ত খেলাধুলা নিষিদ্ধ, এমনকি ঘোড়া দৌড়-তীর নিক্ষেপ এবং স্ত্রীর সাথে খেলাধুলা ছাড়া সমস্ত প্রকারের খেলাধুলা নিষিদ্ধ, নারীর জন্য ড্রাইভিং নিষিদ্ধ, সেই ইসলামের কাছ থেকে গণতন্ত্র শিক্ষা নিতে বলেছেন আমাদের মাননীয় উপাচার্য।
আর প্রগতির কথা বলবেন? পুরো কোরান হাদিস জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন অবৈজ্ঞানিক ও হাস্যকর সব তথ্য। এর কয়েকটা উদাহরণঃ সূর্য পৃথিবীর উপর পরিভ্রমণ করে (সূরা বাকারাঃ ২৫৮), সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আরশের নীচে গিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং পুনরায় উদিত হওয়ার অনুমতি চায়(সহীহ বুখারী ইফাঃ, অধ্যায়ঃ ৪৯/ সৃষ্টির সূচনা, হাদিস নাম্বার: ২৯৭২), দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পিছনে আসে (সূরা আ’রাফঃ ৫৪), ভোরবেলা সূর্য ওঠে শয়তানের মাথায় দুই প্রান্তের মধ্য দিয়ে (সহীহ্‌ বুখারী, ৪:৫৪:৪৯৪)। তাছাড়া আরো রয়েছে বিভিন্ন নারী বিদ্বেষমূলক, অমানবিক, অযৌক্তিক, পরস্পর বিরোধী অজস্র আয়াত ও হাদিস। সেই ইসলাম নাকি বলে প্রগতির কথা!
আর উদারতা? পুরো কোরান জুড়ে ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের মানুষকে হেয় করে , কটাক্ষ করে, মৃত্যুর আদেশ দিয়ে, কাফের মুশরিক বলে, পাপাচারী বলে, শয়তান বলে তাদের জন্য দোজখ নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং আল্লাহতায়ালা। যেখানে ইসলামে মানুষকে মানুষ হিসেবেই মূল্যায়ন করে না, নারী নেতৃত্ব হারাম করেছেন, বহুবিবাহের নামে নারীর প্রতি অবিচারের সুযোগ করে দেয়, নারীকে পুরুষের অধীন করে ও অর্ধেক মর্যাদা দেয়, সম্পত্তিতে অর্ধেক প্রাপ্তি সহ-ধর্ষণের বিচারে লাগে চারজন পুরুষের সাক্ষী, সাক্ষী প্রমাণিত হইলেও মেয়েটিকে পাইতে হয় ব্যভিচারের শাস্তি, সাথে তো শিরশ্ছেদ এবং খুনের বদলে খুন, হাতের বদলে হাত এর মত শরিয়া আইন, সেই ইসলামের কাছ থেকে শিখতে হবে আমাদের উদারতা!
মাননীয় উপাচার্য বলেছেন, ইসলামের অপব্যবহার করে ১৯৭১ সালে দেশে নারী নির্যাতন ও গণহত্যা চালানো হয়েছিল। যুদ্ধে আহরিত সম্পদকে গণিমতের মাল হিসেবে হালাল করেছে ইসলাম, যার মধ্যে নারী অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে কোরানে অনেক আয়াত রয়েছে (সুরা আনফাল ৮:০১) (সূরা আল ফাতাহ ৪৮:২০) । নবী নিজেও গনিমতের নারী পছন্দ করতেন এবং ভোগ করেছেন।
আবু আব্দুল আজিজ বর্ণিত- যখন আল্লাহর রসুল খায়বার দখল করলেন, ——- আমরা খায়বার দখল করলাম, তাদেরকে বন্দী করলাম,লুণ্ঠিত মালামালও যোগাড় করলাম। দাহিয়া এসে বলল- হে নবী , আমাকে গনিমতের মাল হিসাবে একটা নারী দিন বন্দিনী নারীদের মধ্য হতে।নবী খুব উদার ভাবে বললেন- যাও তোমার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে নাও। সে তখন সাফিয়া বিনতে হুইকে নিল। এক লোক এসে বলল- হে নবী আপনি দাহিয়াকে সেই নারী দিয়েছেন যে নাকি খায়বারের সর্দারের স্ত্রী। নবী তখন তাকে সাফিয়াকে তার কাছে আনার জন্য হুকুম করলেন। সাফিয়াকে তার সামনে আনা হলে, তিনি দাহিয়াকে অন্য নারী নিতে বললেন ও সাফিয়াকে নিজের কাছে রেখে দিলেন। (বুখারি, বই -৮, হাদিস-৩৬৭)
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবার ধর্মশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে -প্রধানমন্ত্রী (২২ শে মার্চ, ২০১৬) সাথে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, নতুন পাঠ্যসূচিতে নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি হবে ইসলাম: শিক্ষামন্ত্রী (১৯ শে মার্চ, ২০১৬)। এর সাথে যোগ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাণী। প্রধানমন্ত্রী দেশে পাঁচশো নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৭০টি কোরআন বিতরণও করেছেন। আশা করি দেশের সব লোকের ইসলাম ধর্ম শিক্ষা নিশ্চিত হবে, ইসলাম ধর্ম প্রদত্ত নৈতিকতায় আদর্শে, গণতন্ত্রে, উদারতায় দীক্ষিত হবে। এরপর যথাযথভাবে ইসলাম শিখে হত্যা, নৈরাজ্য, হানাহানি,অশান্তি হলে বলা যাবে, এটা সঠিক ইসলামি মূল্যবোধেরই ফসল, এতে এক আনাও খাদ নেই। তখন আশা করি আমাদের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা ইসলামকে নতুন করে জানবেন শিখবেন এবং বুঝবেন। এর আগে ইসলামের বাঁশের টেস্টটা মিঠাই মনে হচ্ছে আপাতত!

Wednesday, April 13, 2016

ছেলেদের দৃষ্টিতে মা, বোন, মেয়ে, বউ, ভাবী, মামী, চাচী, ফুফী সবার স্তনই দুধ।
এবার বুঝে নিন কোন ধরনের মনস্তাত্ত্বিক সঙ্কোচনের দরুন ঘরে বাইরে আনাচে-কানাচে মেয়েরা অহরহই ধর্ষিত হয়।