বিয়ার পানের অভ্যাসটা নতুন। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এই অভ্যাসটা আমার সাথে সাথে রয়ে যাবে অনেকদিন। বিভিন্ন ব্র্যান্ড ছাঁকা শেষে একটাতে থিতু হবো হয়তো। বরফ শীতল বিয়ারের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে বইয়ের পাতা উল্টাতে বেশ লাগে। আমার প্রাগৈতিহাসিক আধুনিক এন্ড্রয়েড ফোনের বাতিটা আর জ্বলে না অনেকদিন। এটা ঠিক করাতে যে টাকা ম্যাকানিক দাবী করেছে সেই টাকা দিয়ে আরেকটা ভাল মডেলের এন্ড্রয়েড মোবাইল কেনা যাবে। নতুন কোন ফোন কেনার তাড়া অনুভব করছি না ভেতর থেকেই। কথা বলার জন্য একটা ফোন আছে, কালে ভদ্রে রিং বেজে উঠে, আর না হলে আমিই রিং বাজাই। সপ্তাহে চারদিন কালিজিরা বেচা ছাড়া দিন রাতের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটাই। যেন কয়েক শতাব্দীর ঘুম নিয়ে পুনর্জন্ম ঘটেছে আমার।
খুব অল্প সময়ের জন্য ফেবুতে এলে ছাইয়ে চাপা পরা পুরনো আগুনে হাত পোড়ানোর জ্বালার মত সমস্ত গায়ের চামড়া খসখস করে। ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা, অনুভূতিরা যেন সূচের খোঁচায় প্রাণ ক্ষতবিক্ষত করে তুলে, হাঁপিয়ে উঠি। অস্থির সময়, অসহ্য অসহায় নৈতিকতা! তবুও এফ বি থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। নেশার করা মাতালের মত মাথা ঝিম ঝিম করতে থাকে। এরপর আমার ক্লান্তি, হতাশা আর দৈন্যতার সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছানো এক প্রাণের আহ্বানে আবার ঘুমাতে যাই। মেয়ে হয়ে জন্মানোর কৃপা সরূপ পুরুষদের আহ্বান আরেক দফা সামনে এগিয়েছে। এখানে বিদেশীরা ডাকে প্রেমের জন্য নয়, এরা ডাকে জৈবিক তাড়নায় বিছানায়। বেশ কয়েকজনকে বলেছি আমার প্রেমিক বা স্বামী আছে দেশে; তবুও তারা নির্লজ্জের মত অবিশ্বাস করে। বলেই বসে- প্রেমিক থাকলে সমস্যা কি, আমরা থাকি একসাথে, তোর প্রেমিক এলে আলাদা হয়ে যাবো। কি জানি আমার চেহারা দেখে হয়তো মনে হয় আমি প্রেম ট্রেম করতে পারি না। এদেরকে কেমনে বুঝাই প্রেম ছাড়া শরীর উপভোগ করতে পারলে এতদিনে কয়েকটা বাচ্চার মা হওয়ার মত সৌভাগ্য অর্জন করতে পারতাম।
তাছাড়া অতীতের চরিত্রহীনতা বা সুচরিত্রের শীর্ষে পৌঁছানো নিঃসঙ্গ প্রেমিকেরাও ছুঁতে পারে না আমার মনের কোন কোণ। খুব দুঃসময়ের পাশে থাকা এক বন্ধুর সঙ্গ ছাড়া আমার সমস্ত অন্তরাত্মা জুড়ে আছে ঝর্ণার মত ঠাণ্ডা শীতল এক কণ্ঠস্বর, আর দ্যুতিতে ভরপুর দুটি উজ্জ্বল চকচকে চোখ, যা কিনা আমার ভেতর বাহির তোলপাড় করে ভুলিয়ে দেয় ভাল মন্দ বিচারের বোধবুদ্ধি এবং দিন তারিখ সনসহ স্বার্থ হিসেবের সময়জ্ঞান।
No comments:
Post a Comment